শিল্পী মাহফুজুর যে বার্তা দিলো

গতকাল রাত দশটা ত্রিশ মিনিটে সারাদেশের দৃষ্টি পড়েছিল এটিএন বাংলার পর্দায়। এত দ্রুততম সময়ে ফেসবুকে কোনো নিউজ এর আগে ট্রল হয়েছে বলে মনে হয় না।

জনপ্রিয়তা তৈরির জন্য এর আগেও অনেকেই ব্যতিক্রম কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সফলও হয়েছে। খিস্তি-খেউড় ভাষায় নির্মিত "বাদাইম্যা সিরিজ" এই বাংলায় কম জনপ্রিয় নয়।

হিরো আলমের হিরোগিরি ইউটিউবে সর্বোচ্চ ভিউ হয়। গৃহপালিত নায়িকা বর্ষাকে নিয়ে 'অসম্ভবকে সম্ভব করা' অনন্ত জলিল তো কম বিনোদন দেয়নি। 'বাবুরস স্পোকেন ইংলিশ' এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

এবারের রমযানে রেসিপির ইতিহাসে ঝড় তুলে সম্ভবত গিনেসবুকে নাম লিখিয়েছেন সবার প্রিয় কেকাপ্পা। মুরগির পেছন দিক ছিদ্র করে ডিমের সাথে যেভাবে নুডুলস প্রবেশ করালেন তিনি- সেটি একটি শিল্পই বটে।

বিনোদনপ্রিয় বাঙালিকে সর্বশেষ হাসির জোয়ারে ভাসালেন হাল আমলের হার্টথ্রব সঙ্গীতশিল্পী ড. মাহফুজুর রহমান। অবশ্য তিনি 'মাফুজ বাঈ' হিসেবে ইদানীং বেশি পরিচিত। আসুন, তার প্রতিভা একটু দেখে নিই-



গানটি শুনতে ইমেজের উপর ক্লিক করুন...

শিল্প, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রতিভার কোনো বালাই এদেশে এখন আর নেই যেন। আপনার পকেটে টাকা থাকলে হিরোগিরি, শিল্পীগিরি, কবিগিরি  খুব অনায়াসেই দেখাতে পারেন। কবিতার ক্যাটাগরিতে না পড়লেও, দেশ সেরা কবিরা আপনার কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে আসবেন। কবিতা না পড়েই বলে দেবে, "এমন সুন্দর কবিতা আর হয় না!" 

মাহফুজুরের কথিত একক সঙ্গীতানুষ্ঠান আমাদের সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্বের সংকেত দিয়ে গেল। টয়লেটে বসে একদা যারা গলা ছেড়ে গান ছাড়তো, টয়লেট থেকে বের হয়ে তারা শিল্পীর খাতায় নাম লেখালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। 

কেকাপ্পা, জলিল দা, মাফুজ বাঈয়ের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আরও অনেকেই হয়তো এইসব বিকল্প পথে হাঁঁটবেন। কোনো চ্যানেলের (টিভি কিংবা ইউটিউব) মুখ্য উদ্দেশ্য যদি ভিউয়ার বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে সিঙ্গার মাহফুজুর কিংবা হিরো আলম শতভাগ সফল। 

সদরপুর, ফরিদপুর 
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment