Showing posts with label প্রবন্ধ. Show all posts
Showing posts with label প্রবন্ধ. Show all posts

Sunday, 11 November 2018

দেশের মাশরাফি; দশের মাশরাফি; দলের মাশরাফি


বর্তমানে টক অভ দ্যা কান্ট্রি হচ্ছে আওয়ামীলীগের টিকেটে জননন্দিত ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করা। বেশ কয়েক মাস আগে আহম মোস্তফা কামাল এমন একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন- আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন মাশরাফি এবং সাকিব আল হাসান উভয়েই। এই খবর প্রচার হবার পর থেকেই অনলাইন দুনিয়ায় মাশরাফি ও সাকিবকে ঘিরে প্রচুর ট্রল হতে থাকে। মাশরাফি নীরব থাকায় ট্রলের শিকার হন কম। কিন্তু সাকিবের ব্যক্তিগত কিছু আচরণের কারণে অনেক হ্যাটার্স আগেই তৈরি হয়েছিল। তাই ট্রলের শিকার বেশি হন। 

যারা ক্রিকেট খেলা বুঝেন, নিয়মিত খেলা দেখেন, কিংবা যারা খেলা দেখেন না, শুধু খেলার খবর রাখেন, অথবা যারা খেলা বুঝেনও না; দেখেনও না; শুধু মাশরাফির নাম জানেন- তারাও নিঃশর্তে, নিঃস্বার্থে ভালোবাসেন মাশরাফিকে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার নিঃসন্দেহে ওই মাশরাফিই। আকরাম, বুলবুল, নান্নু, দুর্জয়, বাশার, পাইলট, আশরাফুলের হাত ধরে এদেশের ক্রিকেট যে এগোয়নি- তা কিন্তু নয়। তবে ক্রিকেটে ভালো যা কিছু অর্জনের গর্জন আমরা করতে পারি তা কিন্তু এই লিজেন্ড ক্যাপটেন মাশরাফির হাত ধরেই। তাই, মাশরাফি যখন ইনজুরিতে পড়ে যায়, ইনজুরিতে পড়ে যাই আমরা মাশরাফি ভক্তরাও।  

মাশরাফির ভক্ত এদেশের আপামর জনসাধারণ। এমনকি যে লোকটি আজ সারাটাদিন রিকশা চালিয়ে কুড়েঘরে ফিরল সেও। আওয়ামীলীগ বা জাতীয় পার্টির শুধু নয়; বিএনপি কিংবা জামাতের প্রচুর কট্টর সমর্থক রয়েছে যারা সন্দেহাতীতভাবে ব্যক্তি মাশরাফিকে ভালোবাসে। কাজেই একটি দলের হয়ে মনোনয়ন নেওয়াতে আওয়ামীবিরোধীদের মনের রক্তক্ষরণ হওয়া খুবই স্বাভাবিক। অনলাইন দুনিয়ায় প্রচারিত ভাষ্য অনুযায়ী- মাশরাফির প্রতি সাধারণের ভালোবাসার নদীতে ভাটা পড়বে। পড়তেও পারে। অন্য সবকিছুর মতো ভালোবাসাও একালে আপেক্ষিক। অনেকের কাছে গাণিতিক ও স্বার্থকেন্দ্রিক। 
মাশরাফি কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব করবে, সেটি হয়তো তার ভক্তকুল মাথায় আনতে পারেনি।

মাশরাফি চাইলে হয়তো আরও কিছুদিন রাজনীতি থেকে দূরে থেকে সাধারণের অসাধারণ ভালোবাসার জলে সাঁতার কাটতে পারতেন। তাতে মাশরাফির লাভ হলেও; দেশের কী লাভ হতো? আমার এই কথার সাথে বিজ্ঞমহল হয়তো দ্বিমত পোষণ করবেন। করতেই পারেন। তবে আমি ভেবেই বলছি- মাশরাফির মতো ক্লিন ইমেজের সৎ মানূষ রাজনীতিতে নেই বলেই আজ রাজনীতির পুরো আকাশ কলুষিত হয়ে গেছে।  

অনেকেই বলছেন, মাশরাফি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ না করে বরং নিজেই একটা দল গঠন করতে পারতেন। এই মুহূর্তে জননেত্রী হাসিনা কিংবা দেশনেত্রী খালেদার তুলনায় মাশরাফির জনপ্রিয়তা বেশি। সেই হিসেবে মাশরাফির নেতৃত্বে নতুন দল গঠন করে তিনশ আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিলে পাকিস্তানের ইমরান খানের মতো মাশরাফিও প্রধানমন্ত্রী হয়ে এক নতুন দিনের সূচনা করতে সক্ষম হতো। কিন্তু আমার মতে, মাশরাফির কাছে এত বেশি আশা করাটা দূরাশা মনে হয়। যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক না কেন- আমি মাশরাফির বর্তমান সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। মাশরাফির মতো ক্লিন ইমেজের মানূষগুলো যতবেশি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবে তত বেশি এদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। 

তবে অন্য দশজনের মতো আমিও জানতে চাই- বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলতে থাকা অন্য কোনো খেলোয়াড় বিএনপি, জামাত কিংবা জাতীয় পাটির্র মনোনয়ন প্রত্যাশী হলে তাঁকে সুযোগ দেয়া হবে কিনা। 

ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ 
সদরপুর সরকারি কলেজ  
=============================
  


Thursday, 1 November 2018

কেন আমরা পদোন্নতি চাই?


আজ ৩১ অক্টোবর, ২০১৮- শিক্ষা ক্যাডারের ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। কারও কারও জন্য দিনটি প্রাপ্তির, স্মরনীয় ও আশীর্বাদের। কারও কারও জন্য দিনটি হতাশা ও অপ্রাপ্তির। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর শিক্ষা ক্যাডারের সকল টায়ারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। অধ্যাপক পদে ৪০৯ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে ৫৭৪ জন ও সহকারী অধ্যাপক পদে ৬৩৪ জনকে পদোন্নতি দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য বর্তমান সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড. নূরুল ইসলাম নাহিদ এম.পি ও শিক্ষা সচিব জনাব সোহরাব হোসাইনের অবদান শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাবৃন্দ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ রাখবে। আশাকরি, সামনের দিনগুলোতে এই পদোন্নতির গতি আরও বাড়বে।
আমি এবং আমার মতো আরও অনেকেই পদোন্নতির সকল ‘শর্ত ও যোগ্যতা’ পূরণপূর্বক পদোন্নতির প্রত্যাশী ছিলাম। গত কয়েকটি মাসের প্রতিটি দিবস ও রজনী কাটিয়েছি উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠায়। কারণ, চাকরি জীবনের প্রথম পদোন্নতি নানাদিক থেকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার মতো পদোন্নতি যোগ্য কিন্তু বছর শেষে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তার সংখ্যা ৫০০-এর কম হবে না। আমরা ৩১-তম বিসিএসে ‘প্রথম পছন্দ’ দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাষক পদে যোগদান করেছিলাম। ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮ সালে আমাদের চাকরির ৫ বছর পূর্তি হয়। সেই হিসেবে আজকে আমাদের চাকরি বয়স প্রায় ৫ বছর ১০ মাস। আমাদের সাথে যোগদানকৃত অন্যান্য ক্যাডেরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশেষ করে প্রশাসন, পুলিশ, কর ক্যাডার কর্মকর্তাবৃন্দ, ৫ বছর পূর্তিতে প্রায় ৯ মাস আগে ৳-৩৫৫০০/- মূল বেতনে পদোন্নতি পেয়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে। একই সাথে যোগদান করেও শুধু ভিন্ন ক্যাডার হওয়ার কারণে তাদের সাথে আমাদের মূল বেতনের পার্থক্য ৳-৫৯৯০/- এবং বাড়ি ভাড়াসহ এই পার্থক্যের মোট পরিমাণ কমপক্ষে ৳-৮৩৮৬/-। গত ১০ মাসের অধিককাল ধরে তাঁদের থেকে এই পরিমাণ টাকা আমরা কম পাচ্ছি। চক্রবৃদ্ধি বেতন বৃদ্ধির ফলে এই ব্যবধান বছরেরে পর বছর ধরে বাড়তেই থাকবে।
পূর্বে চাকরির ৪ বছর ও ১০ বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড থাকার কল্যাণে একজন কর্মকর্তা ততটা বৈষম্যের শিকার হতো না। ধরা যাক, দুজন কর্মকর্তা একই সাথে ৪ বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড পেল। তারপর প্রথমজন ৫ বছর পূর্তিতে পদোন্নতি পেয়ে বেশি বেতন পেতে থাকল। অন্যজন ৮ বছর পূর্তিতে পদোন্নতি পেল। দ্বিতীয়জন ৩ বছর কম বেতন পেল। কিন্তু ১০ বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেডের কল্যাণে আবারও ওই দুজন কর্মকর্তা একই গ্রেডে বেতন পেয়ে সমতায় ফিরতে পারত। ৮ম পে স্কেল ঘোষণার পর আর পিছিয়ে পড়া কর্মকর্তাবৃন্দ সমতায় ফিরতে পারবে না।
আজকের পদোন্নতিতে ৩১-তম বিসিএসের ৬৫ জন পদোন্নতি পেল। তারা সৌভাগ্যবান। তাদের জন্য রইল অন্তরের গভীর থেকে অভিনন্দন ও শুভকামনা। অন্য ক্যাডারের থেকে বঞ্চিত হয়েছি আরও মাস দশেক আগেই। আজ নিজের ক্যাডারেও বিষয় ভিন্নতার কারণে বৈষম্যের শিকার হলাম আমরা। একই সাথে যোগদান করেও পদোন্নতি প্রাপ্ত ৬৫ জনের তুলনায় পদোন্নতি বঞ্চিত প্রায় তিন শতাধিক কর্মকর্তা কমপক্ষে ৳-৮০০০/- বেতন কম পাবে। বছরের পর বছর সেই পার্থক্য কেবল বাড়তেই থাকবে।
আমরা ৪ বছরের মধ্যে বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি, বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ শেষ করে চাকরি স্থায়ীকরণ করেছি। ৫ বছরের মধ্যে সিনিয়রস্কেল পরীক্ষায় পাস করে পদোন্নতি যোগ্য হয়েছি। সকল শর্ত পূরণ করেও আজ আমরা সকল দিক থেকে বঞ্চিত। একই সাথে যোগদান করে আমদের বন্ধুরা আজ আমাদের থেকে ৩ গ্রেড উপরে অবস্থান করছে। আমরা পদোন্নতি বঞ্চিতরা রয়ে গেলাম ৯ম গ্রেডে, পদোন্নতি প্রাপ্তরা এখন ৬ষ্ঠ গ্রেডে।
পদোন্নতি একজন কর্মকর্তার মানসিক প্রশান্তি বাড়ায়, আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়ায়, বাড়ায় সামাজিক মর্যাদাও। পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা সঙ্গত কারণেই হতাশায় ভুগে, তাঁদের কর্মস্পৃহা কমে যায়, সামাজিকভাবে অনেকক্ষেত্রে তারা অপমানেরও শিকার হয়।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে আগের অনেক বিসিএস ব্যাচ বাকি রয়ে গেছে, এই অযুহাতে নতুনদের পদোন্নতি দেয়া যাবে না- এমন নয়। আগে হয়নি, তাই বলে এখনও হবে না- এটা কেন মানব? অচলায়তন ভাঙতেই হবে। খুলতেই হবে পদোন্নতির জট। অন্যান্য ক্যাডারের মতো যোগ্যতা অর্জন করলেই পদোন্নতি চাই সকল ক্যাডার কর্মকর্তার। ৩২-তম বিসিএসের ৫ বছর পূর্তি হলো ২ দিন আগে। পদোন্নতির শর্ত ও যোগ্যতা পূরণ করে থাকলে তাঁদের পদোন্নতির উদ্যোগ নেওয়া এখন বিবেকের দাবি।
মনে রাখতে হবে- সিলেকশন গ্রেড বাতিলের পর পদোন্নতি ছাড়া গ্রেড উন্নয়ন ও বেতন বৃদ্ধির আর কোনো রাস্তা নেই। দিন শেষে আমরা সকলেই কিন্তু পদ মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির কাঙাল।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
[বি.দ্র. বেশি বেশি শেয়ার করে আমাদের অভিভাবকদের নজরে আনার চেষ্টা করুন।]
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
দীর্ঘ সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
লেখা- ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
৩১-তম বিসিএস (পদোন্নতি বঞ্চিত)

Saturday, 6 October 2018

Paragraph on Folk Music | For HSC students




The songs and music of a community which remain uninfluenced by any sophisticated musical rules or any standard music styles are basically called folk music. Bangladesh has a heritage of rich folk music which includes both religious and secular songs. Folk music has some significant characteristics. It is composed by rural folk based on ancient rules transmitted orally.  Classical or modern music have not influenced these ancient rules of music. No regular practice is vital for folk music. It is basically composed and performed by illiterate or semi-literate rural people. The culture and the lifestyle of the different tribes have also influenced folk music. Tribes like the Santal, Garo, Hajong, Chakma, Monipuri, Tripuri, Marma etc. have immense influence on ethnic Bengali culture and lifestyle. The interaction has been clearly reflected in the richness of folk music. Folk songs may be sung individually or in chorus. Folk songs sung individually include Baul, Bhatiyali, Murshidi, Marfati, while songs sung in chorus include Kabigan, Leto, Alkap and Gambhira. In Banglesh, folk music is losing its appeal to young guys day by day. Modern pop or band songs are greatly influencing the common folk's tastes. Government should take some steps to retain our old heritage and culture.

To Stay Connected with Wadud Khan
Click on here ..... 

Thursday, 4 October 2018

30 Men Demanding Back 30% Quota | A Ridiculous Movement



Honourable Prime Minister Sheikh Hasina, a strong personality, has finally taken  a historic decision regarding quota elimination. Students of universities and colleges were demanding quota reform for several months. Many students were severely injured and some others were arrested for involvement in this protest. After many scenes, recently a gazette notification has been published declaring quota elimination in the recruitment of the first and second class jobs. 
Bangala Tribune, a famous online news portal, today shares a link entitled, "30 men demanding back 30% quota."  
The common mass and general students are feeling fresh and they heartily are expressing their gratitude towards the Prime Minister. But there are some men who are demanding 30% freedom fighter quota again. This scene has made the general people disgusted. If they are meritorious, they should prove their worth. They have still equal opportunities like other ordinary students to face PSC or other authorities. Eliminating quota does not mean eliminating their chances or rights to qualify for job exams. It is good to see that the job market is open to all. Now, all are allowed to play the same games in the same fields. The industrious will survive whereas the lazy will defeat in the battle of jobs. 

Demanding quota back looks very embarrassing to all intellectuals. We, the general, people are now looking for a talent based newer Bangladesh. 

Heartfelt thanks and felicitations to AL Leader Sheikh Hasina again for courageously taking a revolutionary decision though there were innumerable rumours whether quota will be demolished or not. 

Lecturer, English           

Tuesday, 23 January 2018

হাসপাতালের একেকটি বিছানায় কত কাহিনি জমে আছে !


যেখানে গেলে , হৃদয় গলে


জীবনের নানা বাঁকে বড্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছু দিবস-রজনী কাটাতে হয়েছে হাসপাতালে।  হয়তো কাটাতে হবে আরও।  যতবারই আমি হাসপাতালে গিয়েছি- ততবারই খেয়াল করেছি- মনের একটা জায়গা ক্রমশ নরম হয়ে আসছে।  হাসপাতালে আসা মানুষগুলোকে বড্ড অসহায় দেখতে লাগে।  কেমন জানি চাপা ক‌ষ্ট আর উৎকণ্ঠা থাকে হাসপাতালে আসা লোকগুলোর মাঝে।  যে লোকটি দুদিন আগেও মৃত্যু-ভয়কে পরাজিত করে চলেছে, তাকেও দেখা যায় বিমর্ষ।  সময়ের কাছে সে পরাজিতও।  সুস্থতা যে কত বড় নিয়ামত- তা হাসপাতলে না ঢুকলে বোঝা যায় না।



হাসপাতাল থেকে অনেকেই লাশ হয়ে ফেরে।  যাপিত জীবনের সকল বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায় মুহূর্তেই। স্ত্রী-সন্তানকে ফেলে চলে যায় হয়তো  একমাত্র উপার্জনক্ষম পুরুষলোকটি।  ডুকরে ওঠা কান্নার শব্দ শোনা যায় কত!

কত বিচিত্র অথচ কত মর্মান্তিক দৃশ্যের তৈরি হয় ঐ হাসপাতালে।  এমনও দেখেছি- বাবাকে বাঁচাতে সর্বস্ব বেচে দিয়ে চেষ্টা করছে হতভাগা কোনও এক সন্তান।  তারপরেও টাকার অভাবে চিকিৎসা হয়ে যায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।  একবার দেখলাম- ডাক্তার এসে বিমর্ষ এক সন্তানকে বলছে, “দেখুন, আপনার বাবাকে আর বাঁচানো যাবে না।  মৃত্যু অবধারিত।  হি গোস টু দ্যা পয়েন্ট অভ নো রিটার্ন... কী করবেন? এভাবে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখলে পার ডে খরচ হবে মিনিমাম ফাইভ থাউজেন্ড টাকা।  আপনি অনুমতি দিলে লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলতে পারি।”
কী করবে সে?
কী দুঃখ!
কী কষ্ট!

কখনো হঠাৎ করে খবর আসে- যে মেয়েটি গত ছত্রিশটি সপ্তাহ মা হওয়ার নেশায় সহ্য করে যাচ্ছিল সমস্ত যন্ত্রনা- সেই মা আর নেই এখন।  সদ্যজাত সন্তানকে ধরনীর আলো দেখিয়ে চিরদিনের নিঃসীম আধারে হারিয়ে গেছে সে।  হয়তো এই পৃথিবীতে সন্তানটি বেঁচে থাকবে।  কিন্তু মা-হারা এই সন্তানটির একাকীত্ব কিংবা দুঃখের কথা কি ভাবা যায়?

ইনকিউবেটরে রাখা শিশুগুলোর মুখের দিকে তাকানো যায় না।  এক আকাশ দুঃখ ঘিরে ধরে নিজেকে।  শিশুদের গগন-বিদারী আর্তনাদ বুকের মধ্যে শেল হয়ে বিঁধে।  

হাসপাতালে আসা মানুষগুলো কিছুটা আস্তিক হয়ে ওঠে।  স্বগোষিত নাস্তিকেরাও মনে হয় গোপনে প্রার্থনায় বসে।  চোখ দিয়ে জল ছাড়ে।  এই মানবজন্মের অন্তঃসারশূন্যতা প্রতিনিয়ত বোঝে আসে তখন।  এই বাড়ি-ঘর, আসবাব, স্বজন, সন্তান- কেউ যেন আপন নয়। 

কাউকে ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে না বেঁচে থাকা মানুষগুলোর।  কাউকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না মৃত্যুপথযাত্রীর।  এক অদ্ভুত মায়ার বাঁধন।  এক অদেখা সুতোর টান।  অথচ, নিত্য এই সুতোর বন্ধন ছিন্ন করে ওপারে চলে যাচ্ছে কাছের মানুষগুলো। 

হাসপাতালের একেকটি শয্যায় কত হাজাররকম কাহিনি জমে থাকে।  কত না-দেখা মানুষের কষ্ট লেগে আছে ওইসব বিছানাতে।  কতলোক মরে ফিরে গেছে বিছানাটি ছেড়ে। 

২৩ জানুয়ারি, রাত ৮ টা ৩৯ মি.

সদরপুর, ফরিদপুর   
____________________________
পাওয়া যাচ্ছে ওয়াদুদ খানের সাড়া জাগানো উপন্যাস "ফ্যান্টাসি-২  (দিবসে বৃষ্টির ছোঁয়া)"... 



কুরিয়ারে পেতে যোগাযোগ করুন: 
০১৭৮৫-৫৬২০৮০ - এই নম্বরে     

Sunday, 10 December 2017

আপনার বাচ্চা কি স্কুলে যায়? এ প্লাস পাবে?

এলোমেলো ভাবনা

বিচিত্র চিন্তা


ছেলের বয়স পাঁচ পেরিয়ে এখন পা রাখল ছয়ে। স্কুলে দেইনি এখনো। এজন্য সমালোচনার অন্ত নেই। অনেকেই বলেন, "আরে, আমার বেবিকে তো ৪২ মাস বয়সেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে দিয়েছি। আর আপনার বাবুর তো ৬১ মাস চলে.... "

"ভালো স্কুল" বলতে ঠিক কি বোঝায়- আমি আমার জীবনের প্রায় ৩৮৪ মাস অতিবাহিত করেও আজও ঠাহর করতে পারলাম না। ছোট্ট বাচ্চারা যখন পিঠ বাঁকা করে বই নিয়ে স্কুলে যায়, এই দৃশ্য দেখে আমার দীর্ঘশ্বাস বেরোয়। তথাকথিত পড়ালেখার চাপ আমার বড্ড অপছন্দ। "ক্লাসের ফার্স্ট বয়"- মানেই ব্রিলিয়ান্ট- আজও এটা মেনে নিতে পারলাম না।

আমি পাগলের মতো একটা পাঠশালা খুঁজি- যার পাশ দিয়ে বয়ে যাবে ছলাৎ ছলাৎ নদী, সামনে থাকবে অবারিত সবুজ খেলার মাঠ। পড়াশোনা বলতে যেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাই বোঝাবে। পাই না এমন স্কুল আর।

আজ থেকে প্রায় ৩২৮ মাস আগে আমিও স্কুলে গিয়েছিলাম। সবুজ মাঠের পর মাঠ ছিল। ছিল চার পাশে অগ্রাহায়নের ধান।

কতো পার্থক্য আজ। আজকের শিশুদের দিকে তাকালে বড্ড মায়া হয়। বাবা হিসেবে বড্ড অসহায় বোধ করি।

ছবি: ইন্টারনেট 
সরকারেরও এ ব্যাপারে কোনো সুদৃষ্টি নেই। পিইসি কিংবা জেএসসি পরীক্ষা অভিভাবকদের মাঝে এক ইঁদুর-দৌড় তৈরি করেছে। বাচ্চাটাকে এ প্লাস পেতে হবে। এজন্য বছরজুড়ে চলে প্রাইভেট, কোচিং, হোম-টিউটর ইত্যাদি। আবার পরীক্ষার আগে ফাস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে মাঠে নেমে যাচ্ছেন অভিভাবকবৃন্দ। বড্ড হতাশ হই।

আমার ছেলেটাকে পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বরং সত্যিকারের কিছু শেখাতে চাই। কিন্তু, তেমন পরিবেশ কি পাব?

সেদিন শুনলাম, প্লে গ্রুপে ভর্তি হতেও নাকি কোচিং করতে হয়। স্কুলে যাবার আগেই কোচিং! কোথায় যাচ্ছে স্বদেশ? প্লে গ্রুপে ভর্তি হতে নাকি ঢাকার স্কুলগুলোতে হাজার বিশেক টাকাও লাগে। মাসিক ফি তো আছেই। লেখাপড়া কেমনযেন পণ্য পণ্য লাগে। গরিব, মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। 

ছেলেকে স্কুলে দেবার আগে মাথায় হাজারও প্রশ্নেরা ভিড় করছে। উত্তর পাই না।


ওয়াদুদ খান
১১ ডিসেম্বর ২০১৬
সদরপুর, ফরিদপুর