পর্ব- ১
সেদিন ফুটবল খেলা চলছিল কলেজ মাঠে। জমে উঠেছিল ম্যাচ। টানটান উত্তেজনা। নীল দলের এক খেলোয়ার লাল দলের ডিবক্সে ঢুকে গেল। সমস্ত দর্শক চিৎকার করে উঠল, "গোওওওওওল...."। কিন্তু না, লাল দলের এক খেলোয়াড় হাত দিয়ে ফিরিয়ে দিল বলটি। দর্শকের দৃষ্টিতে পড়লেও, রেফারির দৃষ্টিতে পড়েনি। রেফারির দায়িত্ব পালন করছিলেন সবার প্রিয় নরেশ চন্দ্র স্যার। তিনি ক্রীড়ামোদী। নিরপেক্ষ ও দক্ষ হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত।
নীল দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আপেল নামের এক খোলোয়াড়, যাকে সবাই কাটা আপেল নামেই চিনে, নরেশ স্যারের কলারে ধরে ফেলল। বলল, "ঘুষ খাইছস হালার পো।" সবাই অবাক। হতভম্ব। একি! শিক্ষকের কলারে ধরল এক ছাত্র! লাল দলের খেলোয়াড় পালটা আক্রমণ করতে আসল।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখা গেল, কাটা আপেল এক ছাত্রের পিঠ বরাবর ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। কলকল রক্ত ঝরছে। একটু দূরেই দেখা গেল নরেশ চন্দ্র স্যার মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। কে যেন দূর থেকে স্যারের মাথা বরাবর ইট ছুড়ে মেরেছে। কিছু ছাত্র অসহায় দৃষ্টিতে নিরাপত্তা দিতে স্যারকে ঘিরে রেখেছে।
তারপরেও অনার্স, মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পেরেছিল কাটা আপেল ।
পর্ব- ২
তারপরেও অনার্স, মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পেরেছিল কাটা আপেল ।
পর্ব- ২
টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, একাধিক ধর্ষণ, কয়েকটি খুনের অভিযোগ নিয়ে সাধারণের মনে ক্যাডার হিসেবে জায়গা করে নেয় সে। ভীতি ও ত্রাসের কারণে সালাম তাকে অনেকেই দেয়।
একদিন তার খায়েশ হলো, নামের আগে অধ্যক্ষ বসাবে। কিছুদিন পর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থী সে। "অধ্যক্ষ আপেলকে ভোট দিন"- ভাবতেও তার ভারি আনন্দ হয়।
এলাকার এমপি কামাল জমাদ্দার। ছাত্রজীবনে তার পরিচিত ছিল কোপা কামাল হিসেবে। তার সাথে পরামর্শ করে এলাকায় এক প্রয়াত রাজনীতিকের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে কাটা আপেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। নিজেই হয় প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। সাঙ্গপাঙ্গদের যোগ্যতা ভেদে নানান পদ দেয়া হয়। সবকিছুই জায়েজ করা হয় কিছু পরিকল্পিত ছকে।
তারপরের ইতিহাস পাঠকের অজানা নয়।
কলেজ জাতীয়করণের মাধ্যমে আবার নতুন করে ক্যাডারের খাতায় নাম লেখায় কাটা আপেল। এখন তার নাম খন্দকার আপেল মেহমুদ। নামের পরে বসায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার।
শোনা যায়, অচিরেই আরও বড় কোনো অফিসের বড় কোনো পদে দেখা যাবে তাকে।
হায় দ্যাশ!
তোমার কী হলো গো!
(সমাপ্ত)
ওয়াদুদ খানের সাড়া জাগানো উপন্যাস "সবই কি মিথ্যা ছিল" ফ্রি পড়তে ডাউনলোড করুন এখান থেকে (Click Here To Download The Novel)...
গল্পকার: ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
সদরপুর সরকারি কলেজ
০১৭৮৫-৫৬২০৮০
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment