Friday, 30 March 2018

কিছু লোকে ধর্ষক; বাকি সবে দর্শক

ভুল করে চোখ যদি পড়ে যায় খবরে
মন বলে যাই চলে আন্ধার কবরে।
এ-কি হাল হয়ে গেল আমাদের দেশটার?
মেয়েদের লুটে খায় ড্রাইভার, হেল্পার।
ক্ষমতায় নারী তবুও নারীরাই অসহায়
ধর্ষণ বাড়ছেই যত দিন-রাত যায়।
ফেসবুকে হাহাকার তাতে ওরা দমে না
শাহবাগে জমলেও ওরা তবুও থামে না।

দেশ এখন দুইভাগ, একভাগে ধর্ষক
বাকি যারা নিরীহ, তারা সবে দর্শক।
শিশু কি-বা বুড়ো হোক নারী যদি জুটে যায়
বাসে কি-বা মাইক্রোতে ওরা মজা লুটে খায়।
ধর্ষক হাওয়া খায় জেলে কি-বা জামিনে
জনতারে মারে প্যাচ এদেশের আইনে।

এই দ্যাশ, আজ শ্যাষ কোথা গেলে আলো পাই?
মন্দে সয়লাব, কোথা গেলে ভালো পাই?

ওয়াদুদ খান
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

Monday, 26 March 2018

Monday, 19 March 2018

ফ্যান্টাসি-১ (একটি বিশুদ্ধ ভালোবাসার গল্প)


কিস্তি-১৭

বিষণ্ণ বিকেল।
জেনির উদাসী মন। 
কীভাবে দেখতে দেখতে পার হয়ে গেলো অনার্সের চারটি বছর। 
কীভাবে কীভাবে যেনো জয়ের সাথে আটকে গিয়েছিলো জেনি। স্মৃতির পাতায় সেটা আজও অম্লান। 

জয়ের সাথে জেনির পরিচয় ফেসবুকের কল্যাণে। 
আতিক ছিলো জেনির ফেসবুক ফ্রেন্ড। 
জয়ের একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করেছিলো আতিক। 
তাতে লেখা ছিল:-
মাইয়া শোনো, তুমি কি খুউব হতাশাগ্রস্ত? তোমার বান্ধবীরা রোজ প্রপোজ পাইতাছে বাট তুমি পাইতাছো না। কোনো প্রোব্লেম নাই বালিকা। আমাকে তোমার ফ্রেন্ডলিস্টে অ্যাড করো। 
কথা দিচ্ছি- প্রথম চ্যাটিং-এ তোমাকে প্রপোজ করবো আমি। প্রপোজ করবার মতো সাহস এবং অভ্যাস দুটোই এই সভ্য ছেলের আছে। ফীলিং একা একা আর ভালোলাগে না অ্যাট প্রেমনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
স্ট্যাটাস পড়েই কৌতুহল জাগে জেনির। তাড়াতাড়ি- জয়ের প্রোফাইলে ঢুকে ও। 
ও বাব্বা! 
এতো সুন্দর চেহেরা কোনো ছেলের হয়! 
কী স্মার্ট লুক! 
মায়াবী চোখ। 
কিন্তু ছেলেটা এতো অসভ্য কেনো? নিশ্চিত প্রেমের সেঞ্চুরি করা ওর লক্ষ্য। 
যাক একটু টাইম পাস করে দেখি- কেমন ছেলে ও। 

জয়ের প্রোফাইলের অ্যাবাউটে লেখা ছিলো:-
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি...............
যদিও জানি- নাটোরের বনলতা সেন আমাকে দুদন্ড শান্তি দিবে না।
তবুও, হাঁটিতেছি পথ........................ 
মনে হয়, এই অ্যাবাউট পড়াটাই ওর কাল হয়ে গিয়েছিলো। 

ওদের প্রথম দিককার চ্যাটিং জয় ভুলে গেলেও, জেনি একটুও ভুলেনি। এখনো মনে পড়ে......... 
- হাই, ম্যাম আপনি কি রেডি?
- কথা নেই, বার্তা নেই জিজ্ঞেস করছেন রেডি কিনা? 
- আপনি অ্যাড করেছেন। আমার শর্ত মেনেই নিশ্চয় করেছেন।
- কী শর্ত? কখন দিলেন?
- আজব। আমার স্ট্যাটাসে বলা ছিলো- আমি প্রপোজ করবো। মনে নাই। 
- ওহ! আচ্ছা, আপনার কি সেঞ্চুরি করা লক্ষ্য? কতো রান করেছেন? 
- বুঝতে পারার জন্যে ধন্যবাদ। আপনাকে প্রপোজ করলে বিরাশি রান হয়।  গত রবিবারে পূর্ণ হয়েছে একাশিতম.............. 
- লজ্জা করে না আপনার?
- দেখুন, লজ্জা করবে কেনো? এমনো তো হতে পারে- এ পর্যন্ত আপনি একাশিবার প্রপোজ পেয়েছেন- আমার প্রপোজে আপনার বিরাশিকলা পূর্ণ হবে। 
- বিরাশি কলা? এখানে কলা কোথা থেকে আসলো?
- ষোলোকলা শুনেছেন তো। ষোলোকলা অনেকেরই পূর্ণ হয়। আপনার না হয়- একটু বেশি কলা পূর্ণ হোক। একশ কলা পুর্ণ হোক আপনার। ওকে আপু। রেডি হন। প্রপোজ করছি............ 
- সত্যি সত্যি প্রপোজ করে ফেলবেন? চেনা নেই, জানা নেই......... 
- হুম করবো। 
- ওকে। করেন। 
জেনি এটা মজা করে বলেছিলো। জয়ের উত্তর শুনে সে অবাক না হয়ে পারলো না। 
- আমি আপনাকে প্রপোজ করছি- আপনি কি আমার ফ্রেন্ড হবেন? ফ্রেন্ড? হুম, ফ্রেন্ড হবেন? 

জেনি মনে মনে যা ভেবেছিলো- জয় সেটা বললো না। 
আর জয় তো তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলো- সে প্রপোজ করবে। 
প্রেমের প্রপোজ করবে- সেটা তো বলেনি। 
বন্ধুত্বের প্রপোজও যে হতে পারে- জেনির সেটা মাথায়ই ঢুকেনি। 

তারপর থেকে প্রায় চারটা বছর জয়ের কথার বৃষ্টিতে জেনি ভিজে যাচ্ছে অবিরাম। 
জয় এক কথার আকাশ। 
জয়ের আকাশে শুধু কথার মেঘ। আর কথার বৃষ্টি।  
কতো কথা জানে জয়। 
কতো কথা! 

ওয়াদুদ খানের সর্বাধিক পঠিত উপন্যাস "ফ্যান্টাসি-১"... 

সম্পূর্ণ উপন্যাসটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে...
(Click here to Download the full novel)

Thursday, 8 March 2018

ফারিহা, শুধু তোমার জন্য (একটি অকবিতা)


ও য়া দু দ     খা ন

ফারিহা,
তুমি যখন ক্লাস সেভেনে
এতোটা পবিত্র লাগতো তোমায়
মনে হতো-
তোমাকে মানায় ঐ হেভেনে।

ভাবতাম-
তুমি বড়ো হলে
আমার নিখাদ বিশ্বাস
আর এক আকাশ ভালোবাসা
তোমার মনের সিন্দুকে জমা রেখে দেবো।

সেই তুমি-
চুপচাপ কবে বড়ো হলে জানলামই না।
অবাক হয়ে দেখলাম-
তুমি যখন ক্লাস নাইনে
অনেক আপাত সুশ্রী ছেলে
আছে তোমার লাইনে।

তোমার দিকে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকা ছাড়া
এ হাধারাম প্রেমিকের কীইবা করার ছিল?

জানো ফারিহা,
তুমি যখন উঠে গেলে ক্লাস টেনে
কতোবার ভেবেছি-
ভালোবাসা দিয়ে
তোমাকে নিয়ে আসি এ বুকে টেনে।

হঠাৎ শুনলাম-
তুমি ঢাকা চলে গেছো।
ঢাকা গিয়ে
লাল, নীল, সবুজ বাত্তি দেখে
তুমি বদলে গেলে আমূল।
প্রথম মাসেই খবর পেলুম-
তোমার হাতে এক নবাগত প্রেমিকের হাত।
দুমাস পরেই নাকি দেখা গেল অন্য আরেক যুবক।

ফারিহা,
তুমি এভাবে নষ্ট হবে
কোনোদিন ভাবিনি
এতো ভালোবাসার জলে কাটবে সাঁতার
মাথায় আসেনি।
ভার্সিটির ছয় বছরে নাকি
ডজনখানিক প্রেম হলো তোমার।

নিত্য নতুন প্রেমে
কিছু সুখে কিংবা অ-সুখে
কাটলো তোমার সময়।
সেদিনের সেই গ্রাম্য সরল বালিকা
হয়ে গেলে ঢাকার জনপ্রিয় প্রেমিকা।
আমার মতো আবালের খোঁজ
তুমি রাখবে কখন?
রাখবে কেন?

ঢাকায় আমিও ছয়টা বছর ছিলাম।
ঢাকার অলি-গলি, নর্দমায়
নোংরা ভালোবাসার পুঁজে
খুঁজে নিতে চেয়েছিলাম নিষিদ্ধ সুখ।
কিন্তু ফারিহা,
তোমার খবর রাখা ছাড়া এই আতেল প্রেমিক
আর কিচ্ছু করেনি।

জানো না তো............
আমিও তোমার মতো নষ্ট হয়ে গেছি।
তোমার অবক্ষয়ের খবর পেয়ে 
বিড়ির বিচ্ছিরি ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে
আমার দুঠোঁট নিকষ কালো হয়ে গেছে।
মলিন অ্যাশট্রেতে জমা রাখি
আমার নষ্ট জীবনের বিশুদ্ধ ভালোবাসা...............

লেখা: ওয়াদুদ খান
১৯ মে, ২০১৫
সদরপুর, ফরিদপুর