Friday, 22 December 2017

মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি......


সালটি ১৯৭১। মাসটি ছিল জুলাই।

ভরা বর্ষা। চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। প্রচন্ড ভয় নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে এসেছিল জয়নাল চাষার ছেলে। অশিক্ষিত বয়স পনের। ওরা গরিব মানুষ। এক বেলা খায় তো আরেক বেলা না খেয়ে থাকে।

বিড়ি ধরিয়ে ছিপ ফেলে মাছের জন্য অপেক্ষা করতে বেশ লাগে ওরসুতোতে টান লাগলে মনটা নেচে ওঠে। হ্যা, একটু আগেই বড়ো একটা বোয়াল বড়শিতে আটকা পড়েছে। কিন্তু, ইদানীং কোথাও কোনো সুখ পায় না সে।
মাঝে মাঝেই নদীতে মরা মাছের বদলে ভেসে আসে মরা লাশ। পঁচা লাশ। দুর্গন্ধযুক্ত লাশ। দেশে নাকি যুদ্ধ চলছে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। জয়নালদের গ্রামে এখনো মিলিটারি ঢুকেনি। তবুও গ্রামের বেশিরভাগ লোক বাড়ি ছেড়ে ইন্ডিয়া চলে গেছে।

শিকদার পাড়ার মুকাদ্দেস নাকি মুক্তি বাহিনীতে নাম লিখিয়েছে। সেই অপরাধে জব্বর মুনসি মিলিটারি ডেকে এনে সুন্না বাজারে সবার সম্মুখে তাঁকে জবাই করেছে। জব্বর মুনসি নাকি দেশপ্রেমিক। আর মুকাদ্দেস হচ্ছে দেশদ্রোহী।

মেট্রিক পাস খলিলের কাছে গিয়ে মাঝে মাঝে রেডিওতে খবর শুনে জয়নাল। দেশে নাকি মুক্তিযুদ্ধ চলছে। কিছু তরুণ জীবনবাজি রেখে ঝাপিয়ে পড়েছে দেশকে মুক্ত করার জন্য। জয়নাল সেসবের অর্ধেক বোঝে। অর্ধেক বোঝে না।

বোয়াল মাছটা কাঁধে নিয়ে বড়ো একটা ছনের ঘরে ফিরল জয়নাল। তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামছে। বাড়ির সবাই কাপড়ের পুটলি গোছাচ্ছে। পরেরদিন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইন্ডিয়া চলে যাবে সবাই। পাশের গ্রামে গতকাল রাতে আগুন দেয়া হয়েছে। আজকে এই গ্রাম আক্রান্ত হতে পারে ভয় ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।

জয়নালের এই ছনের ঘর ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না। ঐ নদী, বয়ে চলা জলধারা, ডিঙি নৌকা, বিকেলে ছিপ ফেলে মাছ শিকার- এ সবই তাঁকে আকর্ষণ করে।

জয়নালের দাদি বৃদ্ধ। বয়স আশির কাছাকাছি। হাঁটতে পারেন না। মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন। ইমানের সাথে মৃত্যু নছিবের জন্য রোজ নামাযে প্রার্থনা করেন। তিনি কীভাবে যাবেন ওদের সাথে? রাত বাড়ছে। বাড়ছে আতঙ্কও। অবশেষে পরিবারের সবাই সিদ্ধান্ত নেয়, আজকে রাতটা ওরা পাশের কোনো গ্রামে আশ্রয় নেবে। আগামীকাল সকালে বাবা এসে দাদিকে নিয়ে যাবে। আজ রাতটা দাদি এখানেই থাকুক। বৃদ্ধ মানুষ। তাঁকে কেউ আক্রমণ করার কথা না। মিলিটারিরা নাকি মুসলমান। কলেমা বলতে পারলে নাকি সব মাফ। দাদির চার কলেমা ঠোটস্থ।

ছবি: ইন্টারনেট

ওরা কয়েক কিলোমিটার দূরে একটা পুরাতন পরিত্যাক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেয়। দূর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পায় ওরা ভয়ে শরীর হিম হয়ে আসে সবার। কোনোরকমে রাতটা কাটায় ওরা। দিনের আলোতে গ্রামটাকে কেমনযেন মরুভূমি মনে হয়। ভূতুড়ে লাগে। কোথাও কেউ নেই। সুনসান নীরবতা।

জয়নালদের সেই বড়ো ছনের ঘরটিও আর নেই এখন। পুড়ে ছাই হয়ে আছে। আর দাদি?

কিছু কয়লা হাতের তালুতে নিয়ে কেঁদে দিলো বাবা।

মা, মা গো, আমি পারলাম না... ক্ষমা করে দিও...

কবি ও কথাশিল্পী
সদরপুর, ফরিদপুর

ওয়াদুদ খানের সাড়া জাগানো তিনটে উপন্যাস কিনতে ডায়াল করুন:
01785-562080 এই নাম্বারে।

Monday, 11 December 2017

আমরা গরিব- রয়ে গেলাম ওদের কাছে ফেলনা! (কবিতা)


খেলনা চাই
খেলনা দাও


বাচ্চা মেয়ে মাকে ডেকে কেঁদে বলে, "ও মা, 
কত্ত সুন্দর কিনছে পুতুল পাশের বাসার ঝুমা! 
হাসে পুতুল, নাচে পুতুল, কাঁদেও পুতুল ওটা
ডাকলে তারে কথাও বলে, শুরু করে হাঁটা।
ছোঁয়া দিলে নড়ে ওঠে ঠিক আমাদের মতো
দেখলে পুতুল দূর হয়ে যায় মনের যত ক্ষত।
দাও কিনে মা ওই পুতুলটা, দাও না প্লিজ কিনে
ভাল্লাগেনা কিছুই এখন ওই পুতুলটা বিনে।"
যায় হারিয়ে গরিব মায়ের সকল কথা মুখের
সান্ত্বনা সে পায় না খুঁজে, ঝরে পানি চোখের।


বাচ্চা মেয়ে যাচ্ছে বলে, "চুপ আছ ক্যান মা? 
পুতুলটাকে দেয় না ছুঁতে পাশের বাসার ঝুমা।
দেখিয়ে আমায় পুতুলটারে দু গালে দেয় চুমা।
লাগলে তোমায় দেবো আমার পাঁচটা কয়েন জমা।
দাও কিনে মা ওই পুতুলটা, দাও না প্লিজ কিনে
ভাল্লাগেনা কিছুই এখন ওই পুতুলটা বিনে।" 
বলতে গিয়ে গরিব মায়ের কথাগুলো যায় জমে
ঝরলে অশ্রু তবেই যেন দুঃখ একটু কমে
কোলে নিয়ে বাচ্চাটাকে মা শুধু বলে এই--- 
"গরিব আমি- পুতুল কেনার সাধ্য আমার নেই। 
ধনী ওরা ওদের আছে হাজার রকম খেলনা
আমরা গরিব রয়ে গেলাম ওদের কাছে ফেলনা।
স্বপ্ন-সাধ সবই আছে নেই তো মোদের সাধ্য
রোজ অপমান ওদের কাছে হতে মোরা বাধ্য।" 
বাচ্চা মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বোঝে না সে কিছু
রোজ সকালে বৃথাই ঘুরে ঝুমার পিছু পিছু...

(আসুন, আমাদের বাচ্চাদের গরিব-অনাথ শিশুদের সাথে খেলতে শেখাই)

ওয়াদুদ খান
সদরপুর, ফরিদপুর
০৮ ডিসেম্বর, ২০১৭

Sunday, 10 December 2017

আপনার বাচ্চা কি স্কুলে যায়? এ প্লাস পাবে?

এলোমেলো ভাবনা

বিচিত্র চিন্তা


ছেলের বয়স পাঁচ পেরিয়ে এখন পা রাখল ছয়ে। স্কুলে দেইনি এখনো। এজন্য সমালোচনার অন্ত নেই। অনেকেই বলেন, "আরে, আমার বেবিকে তো ৪২ মাস বয়সেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে দিয়েছি। আর আপনার বাবুর তো ৬১ মাস চলে.... "

"ভালো স্কুল" বলতে ঠিক কি বোঝায়- আমি আমার জীবনের প্রায় ৩৮৪ মাস অতিবাহিত করেও আজও ঠাহর করতে পারলাম না। ছোট্ট বাচ্চারা যখন পিঠ বাঁকা করে বই নিয়ে স্কুলে যায়, এই দৃশ্য দেখে আমার দীর্ঘশ্বাস বেরোয়। তথাকথিত পড়ালেখার চাপ আমার বড্ড অপছন্দ। "ক্লাসের ফার্স্ট বয়"- মানেই ব্রিলিয়ান্ট- আজও এটা মেনে নিতে পারলাম না।

আমি পাগলের মতো একটা পাঠশালা খুঁজি- যার পাশ দিয়ে বয়ে যাবে ছলাৎ ছলাৎ নদী, সামনে থাকবে অবারিত সবুজ খেলার মাঠ। পড়াশোনা বলতে যেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাই বোঝাবে। পাই না এমন স্কুল আর।

আজ থেকে প্রায় ৩২৮ মাস আগে আমিও স্কুলে গিয়েছিলাম। সবুজ মাঠের পর মাঠ ছিল। ছিল চার পাশে অগ্রাহায়নের ধান।

কতো পার্থক্য আজ। আজকের শিশুদের দিকে তাকালে বড্ড মায়া হয়। বাবা হিসেবে বড্ড অসহায় বোধ করি।

ছবি: ইন্টারনেট 
সরকারেরও এ ব্যাপারে কোনো সুদৃষ্টি নেই। পিইসি কিংবা জেএসসি পরীক্ষা অভিভাবকদের মাঝে এক ইঁদুর-দৌড় তৈরি করেছে। বাচ্চাটাকে এ প্লাস পেতে হবে। এজন্য বছরজুড়ে চলে প্রাইভেট, কোচিং, হোম-টিউটর ইত্যাদি। আবার পরীক্ষার আগে ফাস হওয়া প্রশ্নপত্র পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে মাঠে নেমে যাচ্ছেন অভিভাবকবৃন্দ। বড্ড হতাশ হই।

আমার ছেলেটাকে পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বরং সত্যিকারের কিছু শেখাতে চাই। কিন্তু, তেমন পরিবেশ কি পাব?

সেদিন শুনলাম, প্লে গ্রুপে ভর্তি হতেও নাকি কোচিং করতে হয়। স্কুলে যাবার আগেই কোচিং! কোথায় যাচ্ছে স্বদেশ? প্লে গ্রুপে ভর্তি হতে নাকি ঢাকার স্কুলগুলোতে হাজার বিশেক টাকাও লাগে। মাসিক ফি তো আছেই। লেখাপড়া কেমনযেন পণ্য পণ্য লাগে। গরিব, মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। 

ছেলেকে স্কুলে দেবার আগে মাথায় হাজারও প্রশ্নেরা ভিড় করছে। উত্তর পাই না।


ওয়াদুদ খান
১১ ডিসেম্বর ২০১৬
সদরপুর, ফরিদপুর

Wednesday, 6 December 2017

জেলে (JAIL) যাচ্ছে জেলে (FISHERMAN) ! (রম্য কবিতা)

দেশে এখন হচ্ছেটা কী?
শরম লাগে- ভাবতে গেলে
রক্ষকেরা খাচ্ছে গিলে
চুরির একটু সুযোগ পেলে।
সন্ত্রাসীদের কদর ভীষণ
মাছ ভেজে খায় গরম তেলে।
আইনের ওই ফাঁকফোকরে
জেলে (jail) দেখি যাচ্ছে জেলে (fisherman)! 


ছাকিপ খোকাও হচ্ছে চরম;
অপুটাকে নরম পেয়ে
শরীরে ওর চর্বি জমা
তিনবেলা রোজ গরম খেয়ে।




নষ্ট লোকের মিষ্টি জুটে
ভদ্রলোকের জুটছে মুলা
কাজের বেলায় ঠন-ঠনাঠন
খালি ওদের সেল্ফি-তোলা।

ঘাস খেয়ে যায় আমজনতা 
বাটপারেরা খাচ্ছে হাঁস
পকেট ওদের হচ্ছে ভারী
দেশের পিছে দিচ্ছে বাঁশ।

কবি ও কথাশিল্পী 
০১৭৮৫৫৬২০৮০


Tuesday, 28 November 2017

'ক্যাডার' থেকে 'ক্যাডার' হওয়ার গল্প


পর্ব- ১
সেদিন ফুটবল খেলা চলছিল কলেজ মাঠে। জমে উঠেছিল ম্যাচ। টানটান উত্তেজনা। নীল দলের এক খেলোয়ার লাল দলের ডিবক্সে ঢুকে গেল। সমস্ত দর্শক চিৎকার করে উঠল, "গোওওওওওল...."। কিন্তু না, লাল দলের এক খেলোয়াড় হাত দিয়ে ফিরিয়ে দিল বলটি। দর্শকের দৃষ্টিতে পড়লেও, রেফারির দৃষ্টিতে পড়েনি। রেফারির দায়িত্ব পালন করছিলেন সবার প্রিয় নরেশ চন্দ্র স্যার। তিনি ক্রীড়ামোদী। নিরপেক্ষ ও দক্ষ হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত। 

নীল দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আপেল নামের এক খোলোয়াড়, যাকে সবাই কাটা আপেল  নামেই চিনে, নরেশ স্যারের কলারে ধরে ফেলল। বলল, "ঘুষ খাইছস হালার পো।"  সবাই অবাক। হতভম্ব। একি! শিক্ষকের কলারে ধরল এক ছাত্র! লাল দলের খেলোয়াড় পালটা আক্রমণ করতে আসল। 

কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখা গেল, কাটা আপেল  এক ছাত্রের পিঠ বরাবর ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। কলকল রক্ত ঝরছে। একটু দূরেই দেখা গেল নরেশ চন্দ্র স্যার মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। কে যেন দূর থেকে স্যারের মাথা বরাবর ইট ছুড়ে মেরেছে। কিছু ছাত্র অসহায় দৃষ্টিতে নিরাপত্তা দিতে স্যারকে ঘিরে রেখেছে।

তারপরেও অনার্স, মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পেরেছিল কাটা আপেল 

পর্ব- ২

টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, একাধিক ধর্ষণ, কয়েকটি খুনের অভিযোগ নিয়ে সাধারণের মনে ক্যাডার  হিসেবে জায়গা করে নেয় সে। ভীতি ও ত্রাসের কারণে সালাম তাকে অনেকেই দেয়।

একদিন তার খায়েশ হলো, নামের আগে অধ্যক্ষ বসাবে। কিছুদিন পর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থী সে। "অধ্যক্ষ আপেলকে ভোট দিন"- ভাবতেও তার ভারি আনন্দ হয়।

এলাকার এমপি কামাল জমাদ্দার। ছাত্রজীবনে তার পরিচিত ছিল কোপা কামাল  হিসেবে। তার সাথে পরামর্শ করে এলাকায় এক প্রয়াত রাজনীতিকের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করে কাটা আপেল  ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। নিজেই হয় প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। সাঙ্গপাঙ্গদের যোগ্যতা ভেদে নানান পদ দেয়া হয়। সবকিছুই জায়েজ করা হয় কিছু পরিকল্পিত ছকে।

তারপরের ইতিহাস পাঠকের অজানা নয়।

কলেজ জাতীয়করণের মাধ্যমে আবার নতুন করে ক্যাডারের খাতায় নাম লেখায় কাটা আপেল। এখন তার নাম খন্দকার আপেল মেহমুদ। নামের পরে বসায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। 

শোনা যায়, অচিরেই আরও বড় কোনো অফিসের বড় কোনো পদে দেখা যাবে তাকে।

হায় দ্যাশ!
তোমার কী হলো গো!
(সমাপ্ত)


ওয়াদুদ খানের     সাড়া জাগানো উপন্যাস  "সবই কি মিথ্যা ছিল"   ফ্রি পড়তে ডাউনলোড করুন   এখান থেকে (Click Here To Download The Novel)... 



     গল্পকার: ওয়াদুদ খান
            প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
            সদরপুর সরকারি কলেজ
      ০১৭৮৫-৫৬২০৮০


Saturday, 25 November 2017

'পরোটা' খাও, দেশের 'বারোটা' বাজাও!

বোকা সোকা ছেলেটাকে আংকেল ডেকে কয়, 
"চাকুরির খোঁজে কেন জুতো-মেধা করো ক্ষয়?
এই দ্যাশ আজ শ্যাষ বুঝে গেছে পাগলেও
বাঘমামার কানে টান দিয়ে যায় ছাগলেও
গুরু খায় কিল, লাথি- গরু পায় পুজোটা!"
চুপচাপ কথা শোনে বোকা সোকা ছেলেটা। 

কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে ছেলে বলে, "আংকেল, 

মেধা ছাড়া চাকুরির জানা আছে কোনো খেল?" 
কত পড়ি, কত ঘুরি খুলে না তো মোর luck (লাক)।
চাকরির চিন্তায় চুল ঝরে হলো টাক।" 

চুন দিয়ে পান খেয়ে চাচা করে ঠোঁট লাল

"খাটি কিছু চলে না তো, চলে খালি পঁচা মাল
যদি থাকে ধৈর্য, যদি থাকে ইচ্ছা
শোনো তবে ও পাড়ার ফজলুর কিচ্ছা
টেনেটুনে মাস্টার্স করেছিল কমপ্লিট
তাতেই সে হয়েছিল মহা ফিট, মহা হিট!
এখন সে রোজ খায় মোগলাই-পরোটা,
লাউয়ের আগা খায়, খায় তার গোড়াটা 
যদিও বা বেজে গেছে স্বদেশের বারোটা।" 

"তারপর? কী গো হলো?" জিগায় ওই ছেলেটা।

"নেতা ধরে পাতি ঢেলে ঢুকেছিল কলেজে
ফজলুটা ডিজি হবে ছিল কার নলেজে?"
"ডিজি হলো! তাই নাকি? কীভাবে কি possible (পসিবল)?" 
ছেলেটার দুই চোখে দেখা মেলে নোনাজল।
"ঘুম থেকে ওঠে দেখে কলেজ ওর জাতীয় 
ফজলুরা হয়ে গেল ক্যাডারে আত্তীয়
তেল মেরে কাজ সারা ওদের কাছে easy (ইজি) গো
তাই ওরা শিক্ষার এডি, ডিডি, ডিজি গো।"


ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি
সদরপুর সরকারি কলেজ

ওয়াদুদ খানের সাড়া জাগানো উপন্যাস কষ্টকথা সাফল্যগাথা কিনতে চাইলে, অনলাইনে অর্ডার করুন এখানে (Click Here To Order Your Copy)