Friday, 5 October 2018

Suggestions for Degree (Pass) 3rd Year's Compulsory English



Suggestions for Degree 3rd Year Students
Compulsory English
Suggested by 
Wadud Khan (Lecturer, English)



PART-A (Reading & Understanding) Marks- 10

For Question No: 1 (A&B)

1. Most of our students cannot write out their examination….
2. Education means mental and moral training…..
3. Everybody desires success in life but few attain it….
4. Liberty does not descend upon people…..
5. Today women are playing important role in all spheres of life…..
6. Change is life, change is progress, and change is culture and civilization….
7. Money cannot buy happiness….
8. Patriotism is a noble virtue…….
9. An intellectual is one who is an enlightened……
10. Man has an inborn curiosity to see the unseen…….

PART-B (Grammar) (Answer any five) Marks- 20

Question No: 2-9

No Suggestion is given for this topic. Try to solve the previous years’ questions. The more you practice, the more you feel comfortable in this topic. If you don’t understand tenses, you must fall in danger. Start study from tenses and other basic grammars.

PART-C (Writing Part) (Answer any five) Marks-50

(Question-No: 10-17)

Essays

1. Patriotism
2. Students and Social Service
3. Unemployment Problem
4. Wonders of Modern Science
5. Natural Calamities
6. Uses and Abuses of Internet

Paragraphs

1. Uses and Abuses of Facebook
2. Independence Day
3. Digital Bangladesh
4. Pollution
5. Winter Morning
6. Friendship

Report Writing

1. Fire Accident / Road Accident / Boat Capsize
2. Cultural Program at Your College
3. Independence Day/ Mother Language Day/ Victory Day Celebration
4. Price Hike
5. Causes of Failure in English

Letter Writing  

1. Write a letter to your younger brother about the bad effects of smoking and advising him not to smoke/ not to use Facebook.  
2. Write a letter to your father informing about your preparation for the coming/ ensuing examination.
3. Write a letter to your younger advising him to avoid bad company.
4. Write a letter to your friend informing what you would like to do after your graduation.
5. Write a letter to your foreign-friend inviting him to visit Bangladesh.

Application

1. Permission to go on a study tour
2. Transfer certificate/ Testimonial  
3. Set up a canteen/ Common room/ Playground  
4. Provide sound system/ Multimedia Classroom
5. For a seat in the college hostel
6. Job Application

Amplification

1. NECESSITY IS THE MOTHER OF INVENTION   
2. PRACTICE MAKES A MAN PERFECT
3. HONESTY IS THE BEST POLICY
4. THE PEN IS MIGHTER THAN THE SWORD
5. PREVENTION IS BETTER THAN CURE

Dialogue

1. Write a dialogue between you and your friend about the necessity of learning English/ about the importance of learning English.

2. Imagine you are Shewli. You have a sister whose name is Pewli. Your mother’s birthday falls on September 25. You want to buy a birthday gift for your mother. You talk about this matter with your sister, Pewli. Now, write a dialogue between you and your sister about buying a gift for your mother.

3. Imagine you are a degree examinee. Your examination is going on. You are fed up with load shedding at this time. You met your friend Mamun and talk with him about the problem of load shedding. Now, write a dialogue between you and Mamun about the problem of load shedding.

4. Imagine you Nova. Your friend is Reshma. Many students fail in English every year. Now, write a dialogue between you and your friend about the causes of failure in English.

5. Imagine you are Huraira. Your younger brother is Hasan. Now, write a dialogue between you and your brother about the danger of smoking/ drug addiction.

[N.B. This Suggestion has been given just to satisfy the weaker students who always look for a super short way to overcome the hurdles of exams. If the students get these topics common in the exam, I’ll take all the credit. But I won’t take any liabilities if no topics are found common.]  

Follow me on Facebook:  ওয়াদুদ খান   

Thursday, 4 October 2018

30 Men Demanding Back 30% Quota | A Ridiculous Movement



Honourable Prime Minister Sheikh Hasina, a strong personality, has finally taken  a historic decision regarding quota elimination. Students of universities and colleges were demanding quota reform for several months. Many students were severely injured and some others were arrested for involvement in this protest. After many scenes, recently a gazette notification has been published declaring quota elimination in the recruitment of the first and second class jobs. 
Bangala Tribune, a famous online news portal, today shares a link entitled, "30 men demanding back 30% quota."  
The common mass and general students are feeling fresh and they heartily are expressing their gratitude towards the Prime Minister. But there are some men who are demanding 30% freedom fighter quota again. This scene has made the general people disgusted. If they are meritorious, they should prove their worth. They have still equal opportunities like other ordinary students to face PSC or other authorities. Eliminating quota does not mean eliminating their chances or rights to qualify for job exams. It is good to see that the job market is open to all. Now, all are allowed to play the same games in the same fields. The industrious will survive whereas the lazy will defeat in the battle of jobs. 

Demanding quota back looks very embarrassing to all intellectuals. We, the general, people are now looking for a talent based newer Bangladesh. 

Heartfelt thanks and felicitations to AL Leader Sheikh Hasina again for courageously taking a revolutionary decision though there were innumerable rumours whether quota will be demolished or not. 

Lecturer, English           

Student Should (or not) Use Facebook | Paragraph



Students should or should not use Facebook has become a debating issue. If a student uses facebook just to communicate with his/ her near and dear ones, then it can easily be said that using facebook is not totally harmful. Actually, very often facebooking gives us somewhat mental relief specially when we feel utter loneliness. A student can very comfortably communicate with his/ her other classmates through Facebook. He/ she can send important  messages instantly and can get up-to-date information from his/ her Facebook friends. But it may be very harmful for a student if he/ she loses control over it. Sometimes, many young students become curious just to make friendship with opposite sexes and try to fall in love. If it happens, their valuable times will be killed on  trifle matters. The relationship based on Facebook is very fragile. A student might lose everything and bring utter disaster by Facebooking. Needless to say, it’s quite tough to decide whether a student would use Facebook or not. It just depends on the mentality of the students. If he/ she applies it for the noble cause, I just appreciate to use Facebook. Otherwise, using facebook should be prohibited.

(আমার এক স্টুডেন্টের অনুরোধে- paragraph-টা লিখার চেষ্টা করলাম)

Wednesday, 3 October 2018

একদা প্রিয়তম | রোম্যান্টিক কবিতা | ট্র‍্যাজিক এন্ডিং




একদা প্রিয়তম,

তুমি কি ভেবেছো
কোনো খবর রাখিনি তোমার?
ঢাকা গিয়ে আধুনিক হয়ে
নব্য ফ্যাশনেবল প্রেমিকা পেয়ে
আমাকে ভুলে গেলেও,
আমি কিন্তু সব মনে রেখেছি।

কত স্মৃতি হারিয়েছে
বিস্মৃতির অন্ধকারে
ভুলে গেছি বান্ধবীদের নাম,
কিন্তু তোমার প্রতিটা কথা
মনের খাতায় লেখা কবিতার মতো
আজও ছন্দ তুলে
নদীর ঢেউ তুলে
দুচোখ বেয়ে বৃষ্টি নামে।

কত খবর নিয়েছি তোমার ...

শুনেছি ভার্সিটি ক্যাম্পাসে,
কিংবা বিভিন্ন পার্কে
প্যান্ট শার্ট পড়া এক মেয়ের সাথে তোমাকে
অন্তরঙ্গভাবে দেখা যায়।

তবুও
বোকা মেয়ের মতো
কতদিন সারাদিন
তোমার অপেক্ষায় থেকেছি
ভেবেছি তুমি আসবে
নীড়ে ফিরবে ।
শহর জুড়ে কাচের কোকিল
তুমি বুঝবে।

সেই দুরন্ত কৈশোরে
কিছু কবিতা
কিছু চিঠি
আর চোখ বন্ধ করে
হাতের তালুতে চুমু দিয়ে
শিখিয়েছিলে
ভালোবাসা কারে কয়?

সেই কবিতার ছন্দে
এখনো হারাই
চিঠির ভাষায়
এখনো মাতাল হই।
আলোড়িত হই
সেই চুমুর উষ্ণতায়।

আর তুমি কিনা ......???

ক্লান্ত চোখে একদিন
তোমাকে দেখলাম
ফিরে এসেছো
তবে একা নও,
সাথে তোমার লাইফ পার্টনার।
হ্যাপি কাপল।

ইতি
একদা প্রিয়তমা

লেখা: ওয়াদুদ খান 
তারিখ: ২৬ অক্টোবর, ২০১০

কষ্টকথা সাফল্যগাথা | এক গ্রাম্য যুবকের সফল হওয়ার কাহিনি | উপন্যাস




উপন্যাস: কষ্টকথা সাফল্যগাথা
(পার্ট- ৬)

সেকেন্ড ইয়ারে উঠে একটা টিউশন পেয়ে গেলো স্বপন। শুনে খুব খুশি হয়েছিলো ফাহমি। এক মাস যেতে না যেতেই স্বপন বললো, “ফাহমি, টিউশনটা ছেড়ে দিলাম।”
“কেনো?”, জানতে চাইলো ফাহমি।
- আর বলিস না। মাইয়াটা খুব ফাজিল ছিলো। ক্লাস সেভেনে পড়ে। কিন্তু...
- কিন্তু কী?
- আমাকে অফার করে বসলো।
- অফার! কিভাবে করলো? শুনি।
- তুই তো জানিস, আমি খুব লাজুক টাইপের ছেলেতার মধ্যে গ্রাম থেকে এসেছি শহরে। টিউশনটা খুব দরকার। চুপচাপ পড়াই। কোনোদিকে তাকাই না। মাইয়াটা বলে...
- কী বলে?
- বলে যে- “আপনি কি মাইয়া মানুষ? এতো শরম কেনো আপনার? আচ্ছা, আপনার কি জিএফ নাই?” একথা শুনে আমি তো লজ্জায় শেষ। আমি বললাম, “এই, তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? জিএফ মানে কী?” মেয়েটি বললো, “স্যার, আপনি জিএফ মানে জানেন না?” আমি বললাম, “হ্যাঁ। জানি। জিএফ মানে হলো গুড ফ্রেন্ড। ‘জি’তে গুড আর ‘এফ’তে ফ্রেন্ড।”
হাসি পেলো ফাহমির। হাসি চেপে বললো, “তারপর?”  
- তারপর মাইয়াটা হাসি শুরু করলো খিলখিল করে। বলে যে- “স্যার, আপনি কি আঁতেল? নাকি বেতাল?” আমি বললাম, “মানে?” মেয়েটি বললো, “জিএফ মানে গার্ল ফ্রেন্ড। তবে স্যার আপনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে।”
- তুই কী বললি তখন?
- কী বলবো? বললাম, “এই মাইয়া, তুমি আমাকে কী বলতে চাচ্ছো? স্পষ্ট করে বলো।” তারপর মেয়েটি সরাসরি বলে দিলো, “জানেন স্যার, আমাদের ক্লাসের সব মেয়েরই বিএফ আছে। বিএফ মানে কিন্তু বেস্ট ফ্রেন্ড না। বিএফ মানে হলো বয় ফ্রেন্ড।  আমার শুধু বিএফ নাই। বয় ফ্রেন্ড মানে কিন্তু আবার ছেলে বন্ধু না।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “বয় ফ্রেন্ড মানে কী?” মেয়েটি বললো, “বয় ফ্রেন্ড মানে হলো প্রেমিক। বুঝেছেন? এখন বলেন, আপনি কি আমার বিএফ হবেন?”
- তারপর তুই কী বললি? কী বললি মেয়েটাকে?
- বললাম, “আমার খুব হিসি পেয়েছে। টয়লেট কোনদিকে? তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।”
- হা হা হা। পালিয়ে চলে আসলি নাকি?
- হুম। মান সম্মান নিয়ে বেঁচে এসেছি। টিউশনটা ছেড়ে দিলাম। ঢাকা শহরে ছাত্রী পড়ানোর সাথে দেখি প্রেমটা ফ্রি পাওয়া যাচ্ছে।
- ফ্রি প্রেমের অফারটা গ্রহণ করলি না কেনো?
- এতো প্রেম আমি কোথায় রাখবো? জায়গা নাই। আচ্ছা, ফাহমি তোর কী অবস্থা? আর তো আপডেট পেলাম না।
- কালকে একটা ডেটিং আছে।
- ডেটিং? রিয়েলি?
- ডেটিং বলতে ছেলেটাকে দেখতে যাবো। এফবিতে আমাকে প্রপোজ করেছে। আগে দর্শন, পরে ডিসিশন।
- গুড আইডিয়া। কোথায় আসবে ছেলেটা?
- আমাদের কলেজের গেটে। তারপর বেড়াতে যাবো- সোলস পার্কে। ফুচকা খাওয়ার প্লান আছে।
- ঠিক আছে। ডেটিং শুভ হোক। এখন রাখতে হবে। বিজি।
- ওকে। ভালো থাকিস।

এখন রাত দশটার কাছাকাছি।
ঢাকা শহরে রাত শুরু হয় অনেক দেরিতে। হাঁটছে স্বপন। রাতের খাওয়াটা এখনো হয় নি ওর। পকেটে মাত্র কুড়িটা টাকা আছে। দু’টি চিতই পিঠা ধনে পাতা বাটা দিয়ে কিনে খেলো স্বপন। রাতের খাবার হিসেবে মাঝে মাঝেই চিতই পিঠা খায় ও। শেফালি ফোন করে জানিয়েছে ওদের থাকার ঘরের পাঠখড়ির বেড়াটা পরিবর্তন করা দরকার। রিকশা চালিয়ে যা কামায় তা স্বপনের পড়ালেখার পেছনেই খরচ হয়ে যায়। তারপরেও, অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা জমাচ্ছে ও

ফুল বেঁচে বস্তিতে ফিরছে দশ বছর বয়সী বিল্টু। স্বপনের সাথে বেশ ভালোই খাতির ছেলেটার। বিল্টু লেখাপড়া জানে না। তবে আগ্রহ আছে। স্বপন বিল্টুকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস করলো, “বিল্টু, তোর মতো আর কয়জন আছে?”
- অনেকেই আছে স্বপন দা? ক্যান?
- লেখাপড়া শিখবি?
- দাদা, লেখাপড়া আমাগো লাইগা না। ঢাকা শহর বড়োলোক পোলাপাইনদের লাইগা
- লেখাপড়া শিখতে তোর ইচ্ছে করে?
- করলে কী লাভ?
- আচ্ছা, তোর মতো আর কতোজন আছে? এমন ফুল বেঁচে?
- অনেকেই আছে স্বপন দা? ক্যান জিগাইতেছেন?
কিছুক্ষণ ভাবলো স্বপন। তারপর বললো, “তোরা লেখাপড়া শিখবি? আমি তোদের শেখাবো। সপ্তাহে তিনদিন রাস্তায় জ্বলে থাকা লাইটের নীচে পাটি বিছিয়ে পড়াবো তোদেরপড়বি?”
উত্তরে বিল্টু বললো, “আপনে আমাগো কাছ থাইকা টাকা লইবেন না? মাগনা পড়াবেন?”
স্বপন বললো, “হুম। মাগনা পড়াবো। পারলে- তোদের বই কেনার টাকাও দিতাম।”
এক জাদুকরী প্রভাব আছে স্বপনের। মানুষকে কাছে টানতে পারে দ্রুত। বিশেষকরে বাচ্চাদের।  

তারপর থেকে বিল্টুদের সপ্তাহে তিনদিন পড়ায় স্বপন। স্বপনের স্কুলে এখন তেরোজন ছাত্র। সবাই “অ আ ই ঈ ক খ গ ঘ ১ ২ ৩ ৪” চিনে ফেলেছে।

এই ব্যস্ত নগরে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভীড়ে আঠারো বছরের এক তরুণ রাস্তার পাশে পাটি বিছিয়ে কাঠের টুলে বসে কিছু টোকাই ছেলেদের পড়াচ্ছে- সেটা যেনো দেখার কেউ নেই।   
এ শহরের যুব সমাজের সকলে যখন ব্যস্ত প্রেমে কিংবা কামে। ইয়াবা কিংবা গাঁজায়।
স্বপন তখন রিকশার প্যাডেলে পা দিয়ে গেয়ে যায়, “আমি হারবো না। হারবো না। হারবো না।”  

হার্ড কপির জন্য ডায়াল করুন:   ০১৭৮৫-৫৬২০৮০ 

Tuesday, 2 October 2018

অবাক অবক্ষয় | শিক্ষামূলক রম্য গল্প | চার পর্ব



 হাস্যরসাত্মক এই গল্পে রয়েছে সমকালীন বাস্তবতা

প্রতিটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য এটি অবশ্যপাঠ্য

পর্ব-১
▬▬▬▬

তখন সেপ্টেম্বর। কলেজে এলেন জামান স্যার। পুরো নাম- 'চৌধুরী আশফাক জামান'। ব্রত, পেশা কিংবা নেশা হিশেবে নয়; শিক্ষতাকে তিনি নিয়েছিলেন অনেকটা 'তামাশা' হিশেবে। এই জামান স্যারকে বাচ্চারা ডাকতো 'কামান স্যার' বলে। রোজ ভোরে ওয়ান টাইম রেজার দিয়ে 'দাড়ি কামান' বলে বাচ্চারা তার এ নাম রাখেনি।

নামের পেছনে ছিল ভিন্ন কারণ।

গত প্রিটেস্ট পরীক্ষা চলাকালে তিনি ক্লাসে ঢুকে মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরা অন করে ফেসবুক লাইভে এলেন। বলতে লাগলেন, "হ্যাললো বউন্ধুরা, আমি জামান। এখন আছি পরীক্ষার হলে। আপনারা দেখুন- কীভাবে এ কলেজের বাচ্চারা নকলমুক্ত নয়; বরং নকলযুক্তভাবে আরামে, আয়েশে, কেউ কেউ ঘুমিয়ে কিংবা নেচে-গেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে..."
এক ছাত্র মৃদু শব্দে বলল,
"জামান স্যার,
দয়াকরে মোবাইলটা
নামান স্যার।"
এদিকে ফেসবুক লাইভে যখন মোবাইলটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পুরো শ্রেণিকক্ষটা কাভার করছিলেন জামান স্যার, তখন হঠাৎ সজলের দিকে চোখ পড়ল ওনার। সজল বাম হাঁটুর ওপরে ফোন রেখে নেট গেটে কিছু সিনোনিম খোঁজার চেষ্টা করছিল। সেটা দেখে- সজলের নাক বরাবর সজোরে ন'শো টাকা দামের ওয়ালটন মোবাইলসেটটা ছুড়ে মারলেন জামান স্যার। কপাল থেকে রক্ত ঝরছিল সজলের। ওই ঘটনার পর থেকে  'জামান স্যার' বাচ্চাদের কাছে হয়ে গেলেন 'কামান স্যার'। বাচ্চারা তাঁকে নিয়ে ছন্দও বানিয়েছে কিছু-
"ও কামান স্যার!
বাড়াবাড়ি
কমান স্যার।

ও জামান স্যার
টাকা কড়ি
জমান স্যার।"

জামান স্যার বরিশালের ছেলে। তাই হয়তো একটু সাহসী। সেদিন বাতেনের টি-স্টলে 'কালো-সরু' একটি সিগারেট ধরিয়ে বাইরে তাকালেন ওনি, দেখতে পেলেন- বেঞ্চিতে বসে এই কলেজেরই এক ছাত্র, নাম তমাল, 'শাদা-সরু' একটি সিগারেট ধরিয়ে আয়েশ করে টানছে। বাচ্চাটির সিগারেট টানার স্টাইল অসাধারণ। লম্বা টান দিয়ে বুকের ভেতর ধোঁয়া নেয়। তারপর চায়ের কাপে চুমুক দেয় রাজার ভঙ্গিতে। ডান পা বাম পায়ের ওপরে রেখে সারা গা দুলুনি দেয়। বিড়ির ধোঁয়া চায়ের কড়া লিকারের সাথে পেটের ভেতরে গিয়ে মিশে যায়। ধোঁয়া আর বাইরে বেরোয় না।

মাথায় রক্ত চলে এলো জামান স্যারের। নিজের সিগারেটে সজোরে টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বাইরে বেরুলেন তিনি। ঠাস করে একটা থাপ্পড় মারলেন ছাত্রটির গালে। বাম হাতে থাকা সিগারেটের পশ্চাতদেশ ছিটকে পড়ল দূরে। চায়ের কাপ ভাঙার রিনিঝিনি শব্দ শোনা গেল অনেকটা দূর থেকেও। এক ভিক্ষুক ভিক্ষা চাইতে এসে কেন চা খেয়ে চলে গেল- বোঝা গেল না।

জামান স্যারকে দেখে বাচ্চারা ভয় পায়। কিন্তু এতটুকু শ্রদ্ধা করে না তাকে। শ্রদ্ধা না করার কিছু কারণ যে নেই- তা কিন্তু নয়। ওনি নিজে যা করেন, তাই করতে দিতে চান না ওনার শিক্ষার্থীদের।

ডান হাতে বিশাল মোটা কালো ফিতের ঘড়ি, অন্য হাতে দুটো রুপোর মোটা বালা পরেন জামান স্যার। চুলও কাঁধ পর্যন্ত লম্বা। বেদম টাইট জিন্সের সাথে গোল-গলা কালো কুচকুচে টি-শার্ট পরে কলেজে আসেন তিনি। প্যান্ট বেশি টাইট হওয়ার কারণে দু পায়ের ঠিক মাঝ বরাবর একটু বিচ্ছিরি রকমের উঁচু হয়ে থাকে। সেটা নিয়ে কমনরুমে ছাত্রীরা হাসাহাসি করে। এই যেমন, ফেন্সি সেদিন রুম্পাকে বলছিল, "জামান স্যারের 'কামান' দেখেছিস? মাঝেমাঝে তো 'হিসু' করার পর প্যান্টের জিপারও লাগায় না। লুচ্চা একটা! ছাত্রীদের দিকে নিজেই হা-করে তাকিয়ে থাকে। আর ক্লাসে ছেলেদেরকে চিল্লায়ে বলে 'হারামজাদারা, মাইয়াগো দিকে তাকাইয়া থাকতে থাকতে তোদের চোখ ঘোলা করে ফেলেছিস'।"

সেদিন কলেজের গেটে জিন্স- টি-শার্ট পরে নিজেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি, অথচ ছেলেদেরকে জিন্স পরার কারণে থাপড়িয়ে গেট থেকে বের করে দিচ্ছিলেন। একটা ছেলে তো বলেই ফেলল, "স্যার, আপনার পরনে কী? আপনিও তো জিন্স পরেন। আমরা পরলেই দোষ।" জামান স্যার যেন 'কামান' খুঁজতে লাগলেন। চেচিয়ে বললেন, "এই, এইটা কে রে?"
ছাত্রটি দৌড়ে পালাল। আর ছেলেটি মনে মনে বলল,
"আমাদের জামান স্যার
হাতে যেন 'কামান' তার।
পরেন টি-শার্ট, আর জিন্স
মানুষ তো নয়; স্যার একটা জিনিস।

জামান স্যার,
বাড়াবাড়ি
জারিজুরি
কড়াকড়ি
অকারণে ধরাধরি
এইবার থামান স্যার।"

জামান স্যারের চারিত্রিক গুণাবলি  দুধে ধোঁয়া, ছাকনিতে ছাকা তুলসি পাতার মতো নয়। এক সুন্দরী ছাত্রীর সাথে ফেসবুকে সতেরো দিন চ্যাটিংয়ের পর মেসেজ করেছেন তিনি, "আমাকে আর 'স্যার' নয় 'ভাইয়া' বলে ডাকবা। 'স্যার ট্যার' শুনতে ভাল্লাগেনা।" ছাত্রীটির নাম মল্লিকা মলি। বন্ধুরা খ্যাপায় 'মরলি ক্যা মলি' বলে। মল্লিকার প্রেমিক সংখ্যা অর্ধ ডজনের কম হবে না। কলেজের সবচেয়ে উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রটি যার নাম 'কোপা কামাল' সেও মল্লিকার প্রেমিক। অথচ, এই মেয়েটির সাথেই কিনা জামান স্যারও চ্যাট করেন। হায় রে কলিকাল!

পর্ব-২
▬▬▬▬
                              
তখন এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষা চলছিল।

কেন্দ্রে প্রেবেশের আগে কলেজের বাইরে থাকা পুকুরপাড়ে কয়েকজন ছেলেমেয়ের জটলা দেখতে পেলেন জামান স্যার। তাদের ফিসফিস শব্দ দূর থেকেও শোনা যাচ্ছিল। একজন বলছে, "আধাঘণ্টা আগে হোয়াটসএপে প্রশ্ন পেলাম। বাঁশতৈল কলেজের সিদ্দিক স্যার প্রশ্নের প্যাকেট হাতে পেয়েই ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে।"

পাশের 'মফিজ আলি ডিগ্রি' কলেজের শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছে। 

সেদিন ইংরেজি পরীক্ষা চলছিল। দিন পরীক্ষা কক্ষে ঢুকেই জামান স্যার বললেন, "তোমরা একজনেরটা আরেকজন অবশ্যই দেখে লিখতে পারো- তাতে আপত্তি নেই। কেননা, আমি এসএসসি, এইচএসসি এমনকি বিসিএস রিটেন পর্যন্ত দেখাদেখি করে লিখে এসেছি। ক্যাডার হওয়ার পর গত ডিপার্টমেন্টাল ইকজামে পাঁচজন মিলে বই সামনে রেখে পরীক্ষা দিয়েছি। তবে বাচ্চারা, শব্দ করা যাবে না কিন্তু। আমি একটু নিরিবিলি ফেসবুক চালাবো।" জামান স্যার এটা বলবেনই না বা কেন- সেদিন পরীক্ষাপূর্ব মিটিংয়ে প্রিন্সিপাল স্যার বলে দিলেন, "এই যে নতুন স্যারেরা, বেশি কড়া গার্ড দিবেন না। পাশের মফিজ আলি কলেজের শিক্ষকরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সর্বোচ্চ ছাড় দিবে। এমনকি ইংরেজি পরীক্ষার দিন ওই কলেজের দেবাশিষ গুপ্ত স্যার প্রশ্ন সল্যুশন করে ক্লাসে ক্লাসে বলেও দিবেন। আমরাও একইরকমভাবে ওদের হেল্প করব। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৬ শতাংশ, এবার হবে ইনশাআল্লাহ ৯৪ শতাংশ।" সকল শিক্ষক করতালি দিচ্ছিলেন। শুধু জামান স্যার মুখে থাকা চুইংগামটি আর না চিবিয়ে নিচে ফেলে দিলেন।

জামান স্যার ফেসবুকে মন দিতে পারলেন না। প্রথমে হালকা গুঞ্জন, পরে মৃদু শব্দ, তারপর কোলাহল, চেচামেচি। প্রথম বেঞ্চের এক ছাত্র শেষ বেঞ্চের এক ছাত্রকে চেচিয়ে বলছে, "ওই শালা, রি-এরেঞ্জ কোন বোর্ড থেকে এলো রে? বুঝতেছি না!"

স্যার, মোবাইল থেকে চোখ তুললেন। দেখতে পেলেন- কালোমতো মোটাসোটা মাস্তান টাইপের একটা ছেলে নিজের বেঞ্চ থেকে উঠে গিয়ে অন্য একটা বেঞ্চের মাঝে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। জামান স্যারের মেজাজ গরম হয়ে গেল। ওই ছাত্রের কাছে গিয়ে বললেন, "এই ব্যাটা, উঠ। খাতা দিয়ে দে।" ছাত্রটি না উঠে বরং পকেট থেকে দু টাকা দামের একটি দেশলাই বের করল। সেটা শব্দ করে রাখল বেঞ্চের ওপর। একটি কাঠি বের করে সেটা দিয়ে স্যারের সামনেই প্রথমে কান, পরে হলদেটে দাঁত খোচাতে লাগল। স্যারের রাগ ও ঘেন্না বেড়ে গেল। টান দিয়ে খাতাটা নিয়ে নিলেন৷ কালোমতো মাস্তান টাইপের ছেলেটা সাপের মতো ফুসফুস করছে। আর হাতে থাকা দেশলাইটা বারবার নাড়াচ্ছে। কুড়ি মিনিট পর খাতাটি ফেরত দিলেন জামান স্যার।

একজনের খাতা হুবহু দেখে আরেকজনকে লেখার সুযোগ দেননি বলে শিক্ষার্থীরা জামান স্যারের ওপর ভীষণ খেপে গিয়েছে। একযোগে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে ঢুকে প্রতিবাদী ছন্দ ছেড়েছে ছাত্ররা,
"এই কলেজের জামান স্যার,
তাকে এবার থামান স্যার।"
ওদিকে বাইরে কিছু পোলাপান শ্লোগান দিচ্ছে-
"জামান স্যারের কল্লা
তুলে নেবো আল্লা..."
'তুলে নেবো আমরা' না বলে 'তুলে নেবো আল্লা' বলার রহস্যটা বোঝা গেল না।
ফিরে যাবার সময় প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে থাকা পুরাতন তিনটে চায়ের কাপ, আর দুটো কাঁচের গেলাশ সজোরে আছড়ে ফেলল একজন। কাঁচ ভাঙার ঝনঝন শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল প্রিন্সিপাল স্যারের পাশে পুতুলের মতো বসে থাকা 'ধামাধরা' মকবুল স্যারের। আরেকজন ছাত্রকে দেখা গেল 'আম খাওয়ার চাকু' বাম পকেট থেকে বের করে ডান পকেটে ভরল। এই দৃশ্য দেখে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ইকরাম স্যার কেন থরথর করে কাঁপছিলেন- বোঝা গেল না।

রাতের বেলা ঠোঁটে সিগারেট বসিয়ে, কানে হ্যাডফোন লাগিয়ে এফএম রেডিওর ঝাকানাকা গান শুনে চাপমুক্ত হবার চেষ্টা করছিলেন জামান স্যার। সহসাই জানালায় ঢিলের শব্দ। দ্রুম দ্রুম। গান শুনতে ব্যাঘাত ঘটছিল। হ্যাডফোন খুলে বাইরে বেরুলেন তিনি। একটা ঢিল এসে পড়ল জামান স্যারের চান্দিতে। হাত দিয়ে দেখলেন পাহাড়ের মতো ফুলে গেছে চান্দিটা, কিন্তু রক্ত বেরোয়নি। রাগে, ক্ষোভে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি দিতে লাগলেন তিনি। 

সবকিছু জানতে পেরে- পরেরদিন প্রিন্সিপাল স্যার জামান স্যারকে ডেকে টানা পঁয়তাল্লিশ দিনের ছুটি দিয়ে দিলেন। জামান স্যার বাম হাতে থাকা রুপোর বালা দুটো খুলে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দিলেন। খুশিতে নাকি রাগে এমনটা করলেন- তা বোঝা মুশকিল। বিড়বিড় করে শুধু বললেন তিনি,
"বাংলাদেশে স্যারের বেশে
আর না
যাব জার্মানি; কামাবো ক্যাশ-মানি;
আর ফিরবো না।
আমি জামান-
যাব জার্মানি, হব 'জার্মান'।"


পর্ব-৩
▬▬▬▬

অফুরন্ত ছুটিতে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটস এপ, কখনো বা ইংলিশ-হিন্দি মুভি দেখে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন জামান স্যার। এরই মাঝে একদিন মল্লিকার ফোন,
"স্যার, আপনি খুব ভালো, খুব রোম্যান্টিক,
আপনার সবই সুন্দর, সব ঠিক।
আপনি হ্যান্ডসাম, আপনি অসাম,
আপনি কিউট, আপনি হিরো,
আপনি সুইট, নন ভীরু।
আপনি চলেন নায়কের মতো,
আপনার কণ্ঠটা গায়কের মতো।
আপনি এই,
আপনি সেই....."
জামান স্যার প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজে আবেগে আপ্লুত হলেন। কোথায় যেন তিনি শুনেছিলেন, "সব চায়ের কাপে চুমুক দিতে নেই"- তবে এখন সেটা মনে রাখা কিংবা মানার সময় নয়।

ছুটির দিনগুলি মল্লিকার সাথে চ্যাটিংয়ের রোম্যান্টিকতায় বেশ ভালোই কাটছিল।


পর্ব-৪
▬▬▬▬

ছুটি শেষ।
কলেজে ফিরলেন জামান স্যার। কলেজের অবস্থা আগের চেয়েও ভয়াবহ। ক্লাসেক্লাসে প্রেম, বেঞ্চেবেঞ্চে প্রেম। পুকুরের ঘাটে প্রেম৷ ক্লাসের বাইরে রেস্টুরেন্ট কিংবা ফাস্টফুডের দোকানেও প্রেম জমে ওঠেছে।

উত্তর দিকের চারতলা ভবনের দোতলায় জামান স্যারের ডিপার্টমেন্ট। তখন বেলা আড়াইটার মতো বাজে। দূর থেকে দেখলেন- মল্লিকার মতো একটি মেয়ে পশ্চিম দিকের তিনতলা বিল্ডিংয়ের দোতলার কক্ষ নম্বর ২০৮- এ ঢুকছে। মল্লিকার সাথে সাক্ষাত করার ইচ্ছে হলো ওনার। টয়লেটে ঢুকে পরপর দুটো বিড়ি খেয়ে মাথাটা ফ্রেশ করে নিলেন ওনি।

২০৮ নম্বর কক্ষের সামনে দুজন ছেলে দাঁড়ানো। দরোজার এপাশ-ওপাশ পায়চারি করছিল তারা৷ স্যারকে দেখে ভীত হলো। স্যার জোরে ধমক লাগালেন, " ঐ তোরা এখানে কী করিস। ভাগ।" ছাত্র দুটি পকেট থেকে মোবাইল বের করে বাটন চাপতে চাপতে চলে গেল।


রুমটির মূল দরোজা বাদে অন্যান্য দরোজা-জানালা বন্ধ। কোনো লাইটিং নেই। বেশ অন্ধকার। দরোজার পাশে থাকা ইলেক্ট্রিসিটির সুইচ অন করলেন জামান স্যার। আলোকিত হয়ে উঠল রুম। স্যার যা দেখলেন- সেটা দেখার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না। বজ্রাঘাতের মতো মনে হলো ওনার। সন্ত্রাসী ছেলেটা 'কোপা কামাল' যার নাম তার সাথে আলিঙ্গনরত অবস্থায় সেই মল্লিকা নামের মেয়েটি। তীব্র ঘেন্নাবোধে কোনো শব্দ বেরুলো না স্যারের মুখ থেকে। তারমানে, বাইরে থাকা ওই ছাত্র দুজন এই অপকর্মটা পাহাড়া দিচ্ছিল। হায়! হায়!

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
সেদিন তখন রাত বারোটার ওপরে৷ কলেজের খোলা মাঠে বসে কোপা কামাল, সজল আর কালোমতো মাস্তান টাইপ ছেলেটা সিগারেটের ভেতর গাজা ভরে আয়েশে সুখটান দিচ্ছিল। পাশেই রয়েছে সদ্য কেনা এক বোতল বাংলা মদ। মাতালের মতো ভঙ্গিতে সজল বলল, "শালারা, স্যারের বুক বরাবর প্রথম চাক্কুটা আমি মারুম। মোবাইল দিয়ে আমারে ঢিল মারে৷ শালার পো..."
মাস্তান ছেলেটা মনে হয় এক প্যাগ বেশি খেয়েছে। কণ্ঠে জড়তা।  বলল সে, "শালার পাছায় আমি দেবো বাঁশ। পরীক্ষার সময় আমার খাতা আটকায়ে দিছিল। কত্ত বড়ো সাহস শালা পুতের..."
কোপা কামাল মনে হয় ঘুম থেকে জাগলো। ঘোরের মধ্যে বলতে লাগল সে, "আমি দেবো কোপ। অনেকদিন হয়ে গেল কাউরে কোপাই না। সর্বশেষ বীরপুশিয়ার তমালরে কোপাইছিলাম... চৌদ্দটা কোপ দিছিলাম ঠ্যাঙে... কোপামু রে কোপামু..."

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
সেদিনের ওই ঘটনার পর এক রহস্যময় কারণে জামান স্যারকে আর কলেজে দেখা যায়নি
                                                    
                                                   (সমাপ্ত)
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
গল্পকার: ওয়াদুদ খান
প্রভাষক ইংরেজি বিভাগ, সদরপুর সরকারি কলেজ
লেখকের লেখা সকল উপন্যাস পেতে ডায়াল করুন:
 ০১৬৭৩-৫৯ ৪৫ ৭৯ 
ফ্রি পড়তে চাইলে ভিজিট করুন:
 www.khanwadud.blogspot.com/ 
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

Monday, 1 October 2018

স্মার্ট বনলতা সেন | রোম্যান্টিক কবিতা


শোনো হে একালের জীবনানন্দ-
তুমি কি ভেবেছো কিচ্ছু বুঝি না আমি?
হ্যা, আমি জানি-
শুধু আমার জন্যেই তো 
হাজার বছর ধরে তুমি 
পথ হাঁটিতেছ পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে 
নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে। 
অনেক ঘুরেছ তুমি, 
অনেক হেটেছ তুমি। 
তুমি আজ বড্ড ক্লান্ত প্রাণ এক- 
আর নয়......... 
আর নয় একা একা হাটাহাটি।
হে নিঃসঙ্গ নিশাচর কবি 
এই দেখো পাশে আছি আমি। 
চেয়ে দেখো চারদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
দু’দন্ড নয়, অনেক শান্তি দিতে 
একগুচ্ছ গোলাপ হাতে 
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে চেয়ে  আছি  
আমি একালের স্মার্ট বনলতা সেন। 

লেখাঃ ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
সদরপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর।

Friday, 28 September 2018

আগে টিভি দেখা হারাম ছিল!

ছবিটি প্রতীকী 
তখন টিভি দেখা হারাম ছিল।

মহল্লায়, পাড়ায়, গ্রামে কিংবা আরও দূরের কোনো ওয়াজ মাহফিলে গেলে- হুজুরদের বয়ানে শুনতে পেতাম। গানের সুরে দরাজ কণ্ঠে বলতেন, "টিভি দেখা হারাম, মিয়ারা। যে ঘরে টিভি থাকে, সেই ঘরে রহমতের ফিরিশতা ঢোকে না।"

যাদের ঘরে টিভি নাই, ভাবতাম তারাই সাচ্চা মুসলমান।

হারাম ঘোষণা দিলেও, এই হুজুরদেরই দেখেছি- লুকিয়ে লুকিয়ে, কখনো বা প্রকাশ্যে টিভি দেখতে।

সেকালে রমযানের তারাবি শেষ করে দৌড়ে টিভি দেখতে গিয়েছি- 'দ্যা সোর্ড অভ টিপু সুলতান' দেখতে। অবাক হয়ে দেখেছি, যে পিচ্চি হুজুরটা খতম তারাবি পড়িয়েছে, সেই হুজুর টুপি খুলে সামনে বসে আছে। আমরা পরস্পর চোখ চাওয়া-চাওয়ি করতাম। ব্যাপার কী?

সত্যি, টিভি দেখা সেকালে হারাম ছিল!

শুক্রবারের রাত্তিরে ইশার নামায কোনোওরকমে শেষ করে 'আলিফ লায়লা' যখন দেখতে যেতাম, দেখতাম যার কাছে আমরা মক্তবে আলিফ, বা, তা, ছা শিখেছি- সেই হুজুরও টিভি সেটের সামনে।

তবুও জুমার নামাযের আগে গানের সুরে দরাজ কণ্ঠে হুজুর বয়ান দিতেন, "টিভি দেখা হারাম, মিয়ারা।" টিভি দেখার মতো এত আরামের জিনিস হারাম কেন- এই প্রশ্ন খালি উঁকি দিত মনে।

একবার এক হুজুর বাসায় ঢুকে চোখ তো ছানাবড়া হয়ে গেল। একি! ২৪ ইঞ্চি কালার টেলিভিশন!

তখন টিভি দেখা সত্যি হারাম ছিল!

মোবাইল সহজলভ্য হওয়ার পর থেকে টিভি দেখা কিঞ্চিৎ হালাল হতে থাকে। 'ইসলামিক টিভি' আর 'পিস টিভি' এদেশে সম্প্রচারের পর টিভি দেখা যেন হারাম থাকেনি আর।

টিভির লাইভ টকশোতে এসে এক হুজুর আরামসে বলে দিলো একদিন, "কে বলেছে টিভি দেখা হারাম, মিয়ারা? টিভি দেখা জায়েজ। সওয়াবের কাম। টিভিতে ওয়াজ নছিহত শোনা বহুত পুণ্যের কাজ।"

হুজুররা ঝাঁকে ঝাঁকে টিভিতে আসতে থাকে। টিভিতে টকশো করা হুজুরদের ওয়াজের রেটও বাড়তে থাকে দেদারসে।

ইদানীং ওয়াজের ভিডিও করে হুজুররা ইউটিউবে আপ্লোড দেন। সাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করার জন্য কান্নাকাটি করেন। আমিন লিখলে সওয়াবের গল্প শোনায়। তাদের ভিডিও দেখে নাকি হেদায়েত পেয়েছে অনেক ভ্রষ্ট যুবক।

অথচ, কত অসংখ্য ইমানদার তরুণ ইউটিউবে তাদের ওয়াজ দেখতে গিয়ে ন্যাংটা নাচের খপ্পরে পড়ে যে ইমান হারালো- তাঁর কোনো খোঁজ নেই।

একদা ছবি আঁকা, ছবি তোলা, টিভি দেখা- এসব হারাম ছিল।

এখন সময়ের প্রয়োজনে নাকি সবই জায়েজ ও অবশ্য কর্তব্যও বটে।

আর তাই, যখন কোনো আলেম ইমানের জোশে ফতোয়া দিয়ে বসে, "স্মার্ট ফোন ব্যবহার করা হারাম কিংবা ইউটিউবে বয়ান করাও হারাম।" তখন একালের তরুণ হুজুররা পালটা ফতোয়া দেয়, ওই আলেম পথভ্রষ্ট,  ফিতনাবাজ।

একালে টিভি দেখা যেন আর হারামের নয়; বরং বহুত আরামের কাজ!

ওয়াদুদ খান
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮


বি.দ্র. কোনো হাক্কানি ওলামায়ে কেরামকে হেয় করা এ লেখার উদ্দেশ্য নয়।

Wednesday, 5 September 2018

মেয়েটি অনেক বড়ো হয়ে গেছে | হৃদয় ছোঁয়া ছোটোগল্প


মেয়েটি অনেক বড়ো হয়ে গেছে
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

🔵 মোট চারপর্বের অসাধারণ হৃদয়ছোঁয়া ছোটোগল্প।
🔵 সংগ্রামী প্রতিটি নারীর জন্য এই গল্পটি অবশ্যই পাঠ্য।

(পর্ব-১)
▬▬▬
বন্ধুদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করে বাসায় ফিরছিল রুমা। বাসায় ফেরার আগেই বোমা পড়ল রুমার মাথায়। বলে কী সানজিদা- "রুমা, শোন। তোকে আজকে একটা ছেলে দেখতে এসেছে। ইয়া লম্বা। মোটাও মোটামুটি।"

রুমা ক্লাশ এইটে পড়ে। বয়স ১৩ বছর দুই মাস। বড়ো হওয়া কাকে বলে- এখনও ওর কাছে স্পষ্ট নয়। লজ্জায় কাউকে বলতেও পারে না- "আচ্ছা, মেয়েরা বড়ো হয় কীভাবে?"

তবে কোথাও যেন একটা বিশ্রী ব্যাপার ঘটে গেছে- যা তার সম্পূর্ণ অপরিচিত। এইতো মাস দুয়েক আগে ও একা একাই চুইংগাম কিনতে পাশের এক দোকানে গিয়েছিল। বাসায় ফিরতেই মায়ের চিৎকার- "হারামজাদি, কৈ গেছিলি? বাইরে যাইয়া রূপ না দেহাইলে পেটের ভাত হজম হয় না তোর। এখন বড়ো হইছস। বাইরে যাইয়া এতো হাওয়া খাওন যাইবো না।"

চোখে জল চলে এসেছিল রুমার।
অথচ, কতো অসংখ্যবার সে একা একাই ঐ দোকানটাতে গিয়েছে। পাড়ার সব ছেলেদের সাথে ক্রিকেটও খেলতো ও। আজ সব বারণ। ক্রমাগত পৃথিবীটা উড়নার আবরণে ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল ওর।

ক্লাশ ফাইভ পর্যন্ত এক সাথে ফারুক, রুবেল, আবীরদের সাথে প্রাইভেট পড়েছে রুমা। কখনো মনের ভুলেও কিচ্ছু মনে হয়নি। তিনদিন আগে আবীর একটা নোটের জন্যে রুমার কাছে এসেছিল। আবীর খুব ভদ্র ছেলে। নোট দেবার সময় স্টার জলসার একটা সিরিয়াল নিয়ে ওরা দুজন হেসেছিল। কিন্তু কী আশ্চর্যের ব্যাপার! আবীর চলে যাবার পর- কথা নেই, বার্তা নেই মা এসে কষে এক থাপ্পড় মারলো রুমার গালে, "শয়তান, বদের হাড্ডি। পোলাগো লগে তোর কিসের এত হাসাহাসি? পাড়ার লোকেরা নানান সমালোচনা করে। সে খেয়াল আছে।"

জানালার পর্দা খুলে রুমা বাইরে তাকায়। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ও। ওই যে দূরে একটা মাঠে কিছু ছেলে-মেয়ে একত্রে গোল্লাছুট খেলছে। দৌড়ে ওদের কাছে যেতে ইচ্ছে করে রুমার। মনে মনে বলে, "মা দেখো- এই তো আমি ছোটই আছি। আমি একটুও বড়ো হইনি.................."

মেয়ে বন্ধুদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করে সেদিন বাসায় ফিরছিল রুমা। বাসায় ফেরার আগেই বোমা পড়ল রুমার মাথায়। বলে কি সানজিদা- "রুমা, শোন। তোকে আজকে একটা ছেলে দেখতে এসেছে। ইয়া লম্বা। মোটাও মোটামুটি।"
রুমার মাথা এবং কথা দুটোই অফ হয়ে গেল। একটা ছেলে ওকে দেখতে এসেছে। "আচ্ছা, 'দেখতে আসা' কাকে বলে? আমাকে দেখার আবার কী আছে? রোজ স্কুলে যাবার পথে কত ছেলেরাই তো আমাকে দেখছে। ওহ! কী হচ্ছে এসব?"
রুমা বাসায় আজ যাবেই না।

পাশেই রুবিদের বাসা। রুবি ওর সাথেই পড়ে। রুমা রুবিদের বাসায় গেল। বসে বসে লুডু খেলছিল ওরা। হঠাৎ দেখে পাশেই ওর চাচাতো বোন, ভাবী ও প্রতিবেশি অন্যান্য মেয়েরা, "ঐ তুই পালাইয়া রইছস ক্যান? পোলাডা কিন্তু একের। সৌদি থাকে। সাত ভরি গয়না আনছে বৌয়ের লাইগ্যা। এমন আগুনের গোলার মতো পোলা খুব কম মাইয়ার কপালেই জুটে।" কেউ একজন বলল, "অনেক লেইট হইয়া গেছে। তাড়াতাড়ি রেডি করো রুমারে।"
রুমা পালাবার পথ খোঁজে। না পালাবার জায়গা নেই। একটা ছোট্ট নারীকে আঁকড়ে ধরেছে অন্য দশটা বড়ো নারী। রুমার মনে হচ্ছিল- এই ছোট্ট জীবনের বিশাল স্বপ্নগুলো শাড়ীর কফিনে ঢুকে যাচ্ছে।
কিন্তু কেন?
মেয়েটি নাকি অনেক বড়ো হয়ে গেছে!
স্বপ্নশূন্য মন আর শক্তিশূন্য শরীর নিয়ে রুমা নিজেকে জিজ্ঞেস করে যায়,
"আচ্ছা, বড়ো হওয়া কাকে বলে?"

(পর্ব-২)
▬▬▬
সুদৃশ্য চেয়ারে লাল শাড়ী পরে বসে থাকা ছোট্ট মেয়ে রুমার নিজেকে কোরবানীর গরু বলে মনে হলো। দাম দর ঠিক করে যাকে কিছুদিন পরেই বিয়ের পিড়িতে বসিয়ে আয়েশ করে জবাই করা হবে।

পান খেতে খেতে এক মহিলা এগিয়ে এলো রুমার দিকে। পানের পিচকি রুমার সামনে ফেলে জিজ্ঞেস করল, "এই মাইয়া কাম টাম কিছু পারো? আমাগো কাম টাম তেমুন নাই। মাত্র পাচজুনের সংসার। জামাইতো বিদেশেই থাকবানে। খালি এট্টু ভাত আর ডাউল রানবার পারলেই চলবো।" তারপর একটা হাসি দিলো- হাসির সময় পানের লালজল গড়িয়ে পড়ল ঠোঁট বেয়ে। রুমা মনে মনে বলল, "এই মহিলাটা কে? পেত্নি বলতে কিছু একটা আছে- আচ্ছা, পেত্নি কি এই মহিলাটার চাইতেও কুৎসিত?"

পাশ থেকে ভাবী এসে বলল, "এই রুমা, সালাম কর পায়ে ধরে। এইডা তোর হবু শাশুড়ি। দেখতাছস না কত ভালা মানুষ উনি।"

রুমার ঘেন্না ধরে গেল। পারলে এখনই চিৎকার করে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আরেকজন মধ্যবয়স্ক মহিলা এসে হাজির। "মাইয়া তোমার চুলগুলান একটু বাইর করো তো- দেহি, কতখানি লম্বা।"- বলেই মহিলাটি রুমার অনুমতি না নিয়েই মাথার ঘোমটা খুলে চুল পরীক্ষা করা শুরু করল। রুমার গা শিউরে উঠল। মহিলাটির গালে একটা কড়া থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করছে ওর।
তারপর, আরেকজন এসে রুমার হাত, পা- এমনকি দাঁত পর্যন্ত পরীক্ষা করল। হ্যা, সব ঠিকঠাক আছে। কোরবানির গরুর কোনো ত্রুটি নেই। জবাই দেয়া যায়। তারপরেও আরেকজনের পালা- "মাইয়া তোমার নাম কী? বাবা কী কাম করে? ভাইবুন কয়জুন?"- এইসব আউল ফাউল প্রশ্ন করে যাচাই করল রুমা বোবা কিনা।

রুমার মনে অনেক প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে, "আচ্ছা, ছেলেদের কী এভাবে গরুর মতো বিয়ের সময় যাচাই বাছাই করা হয়?"

এবার দর কষাকষির পালা।
কনেকে বর পক্ষের খুব পছন্দ হয়েছে। মুরুব্বি শ্রেণির এক লোক বিড়ির ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল, "আমাগো একের পোলাডার লাইগা এমন কচি মাইয়াই পছন্দ। যারা কলেজ ভার্সিটিতে পড়ে তাগো আমাগো পছন্দ না। তারা নাহি হেসবুক, টেসবুক চালায়। পিরিতি টিরিতি করে। বুঝেন তো- কলিকাল। ফ্রেশ মাইয়া পাওয়া খুব জ্বালা।" কথাগুলো শুনতে এতটাই অশ্লীল লাগল রুমার কাছে যে ওর বমি চলে এলো। এই লোকটা নাকি রুমার শ্বশুর হবে? ভাবা যায়।

আরেকজন মুরুব্বি কিছিমের লোক বলল, "আমাগো পোলার কুনু ডিমান্ড নাই। মেলা টেহা পয়সা, গয়না গাট্টি নিয়া আইছে। কিন্তু ছোট্ট একখান আবদার আছে আমাগো।" কী আবদার জানতে চাইলে লোকটি বলল, "একখান মোটর সাইকেল দেওন লাগবো। পোলার খুব শখ।"

মনে হয় গরুর হাট বসেছে।
অনেকক্ষন দরদামের পরে ঠিক হলো- হ্যা, ছেলে একটা মোটর সাইকেল পাবে। তবে মেয়েকে সাত ভরি স্বর্ণ নগদ দিতে হবে।
রুমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না। যে মানুষটাকে সে চিনে না, জানে না, জীবনে দেখেওনি- তার সাথে ওর একসাথে থাকতে হবে কেন?

দিনক্ষন ঠিক হয়ে গেল।
আগামী সতের তারিখ, শুক্রবার ওর বিয়ে।
পাড়া-পড়শির মন্তব্য--- "দেখছো, মাইয়ার চেহারা ভালা অইলে কী অয়? বিদেশি টেহাওয়ালা পোলার লগে অল্প বয়সেই বিয়া ঠিক অইয়া গেল। আসলে, টান থাকতেই মাইয়াগো বিয়া দেওন ভালা। রাজরানির কপাল আমাগো রুমার!"

এখন মাঝ রাত।
চারদিকে গভীর অন্ধকার।
রুমা বসে বসে ভাবছে, "আমি পালিয়ে যাব। আসছে শুক্রবারের আগেই। যেভাবেই হোক।"
কিন্তু এই পিচ্চি মেয়ে রুমা কোথায় যাবে?
কার কাছে যাবে?
এই অসীম পৃথিবীতে রুমাদের কি থাকার এতটুকু জায়গা আছে????

(পর্ব-৩)
 ▬▬▬

- স্যার, খবর শুনেছেন?
- কোন খবর, আবীর?
- রুমার তো আজ বিয়ে। সবই ঠিকঠাক। বরপক্ষ চলে এসেছে।
- তাই তো বলি, রুমাকে কিছুদিন ধরে স্কুলে আসতে দেখি না কেন? আচ্ছা, কী করা যায় বলতো, আবীর? ওকে তো বাচানো দরকার।
- স্যার, আমরা সবাই মিলে চেয়ারম্যানের কাছে যেতে পারি।
- হ্যা। গুড আইডিয়া।

ইনি আমাদের হাকিম স্যার। 'বেক্কল মাস্টর' হিসেবেই উনি বিশেষ পরিচিত। আড়ালে আবডালে কেউ কেউ 'পাগলা স্যার' হিসেবেও সম্বোধন করে। কারণ, কিছুদিন আগে পাঞ্জাবির সাথে উনি যে পায়জামাটা পরে স্কুলে গিয়েছিলেন- সেটা উনার পাঞ্জাবির পায়জামা ছিল না। সেটা ছিল উনার বউয়ের পরার পায়জামা। বিশেষ করে ছাত্রীরা তো উনাকে দেখে হেসে কুটিকুটি। পারলে ক্লাসের বেঞ্চেই গড়াগড়ি খায়। স্যার মেয়েদের হাসি দেখে বলে, "বুঝেছি,পায়জামা তোমাদের ভালো লাগে না। ওকে, এরপর থেকে পায়জামাই পরবো না। শুধু পাঞ্জাবি পরেই চলেই আসব।" হাসির শব্দ আরও বেড়ে যায়।

হাকিম স্যার প্রাইভেট পড়ান না। দুর্বল স্টুডেন্টদের উনি ফ্রি পড়িয়ে থাকেন। জোর করে টাকা দিতে চাইলেও- উনি নেন না। এইজন্যে রোজ বউয়ের গালি খান, তবে স্টুডেন্টদের হাতের তালি পান। গালি খেয়ে, কিন্তু হাতের তালি পেয়ে উনার দিন কাটে। টিউশন ফি নেন না বলে- তথাকথিত সমাজের সচেতন নাগরিকরা উনাকে 'বলদ মাস্টর' বলে অভিহিত করেন। একটু অন্যমনস্ক টাইপের লোক হলেও,  উনি কথাবার্তা খুব গুছিয়ে বলতে পারেন। অঙ্ক বুঝাতে পারেন খুব ভালো। শুধু তাই নয়- উপস্থিত ছন্দ বানাতে উনি উস্তাদ। এই তো কিছুদিন আগে- ক্লাসের মধ্যে উনি ছন্দ ছাড়লেন এরকম: 

আমি ইট, তুমি খোয়া
আমি মুড়ি, তুমি মোয়া
তুমি শাবনুর, আমি রিয়াজ
তুমি কাচালঙ্কা, আমি পিয়াজ
আমি কান্না, তুমি হাসি
আমি যক্ষা, তুমি কাশি
আমি খাল, তুমি ব্রিজ
আমি মাছ, তুমি ফ্রিজ
আমি গান, তুমি সুর
আমি কাছে, তুমি দূর
তুমি ছাগল, আমি গরু
আমি শেষ, তুমি শুরু
আমি আপন, তুমি পর
আমি বৃষ্টি, তুমি ঝড়
তুমি চড়ুই, আমি দোয়েল
আমি দেব, তুমি কোয়েল
আমি চোর, তুমি পুলিশ
তুমি চালাক, আমি ফুলিশ
আমি কৈ, তুমি ইলিশ
তুমি মাল, আমি জিনিস
তুমি আছো, আমি ফিনিশ
তোমার চৌদ্দ, আমার তিরিশ
তুমি দামী, আমি ফাও
আমি হারাই, তুমি পাও...............

শেষ করার আগেই করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ক্লাসরুম। যথেষ্ট মেধাবী হয়েও- শিক্ষকতাকে জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নেয়ায়- অনেকেই বলেন, "হাকিম মাস্টারের জ্ঞানের অভাব আছে। বিএসএসি পাশ করেও- কেউ মাস্টারি করে।"
হাকিম স্যার খুব দ্রুত ছুটছেন। সময় বেশি নেই। এখনই- চেয়ারম্যানের কাছে যেতে হবে। তার আগে তিনি হেড মাস্টারের রুমে গেলেন।

- স্যার, আপনাকে কিছু বলবার ছিল।
- হ্যা, হাকিম সাহেব বলেন- কী বলবেন? বলুন।
- স্যার, আপনি কি জানেন- এইবার ক্লাস এইটের সবচাইতে মেধাবী কে? ছাত্র প্লাস ছাত্রীদের মধ্যে?
- দেখলে হয়তো চিনব। নামটা জানি না তো। কেন হাকিম সাহেব? কী হয়েছে।
- তার আগে বলেন- স্যার, আপনি কী চাইবেন আপনার স্কুল থেকে আপনার সবচাইতে মেধাবী স্টুডেন্টকে হারিয়ে ফেলবেন?
- না। তা তো কক্ষনো চাইবো না।
- তাহলে স্যার শুনেন- ক্লাস এইটের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রী মিস রুমার আজ বিয়ে। মেয়েটির বয়স এখনো চৌদ্দও হয়নি।
- ওহ! এই ব্যাপার। কিন্তু হাকিম সাহেব- আমাদের কী করনীয়? যেখানে মেয়েটির বাবা-মা রাজি- সেখানে কী আমাদের কোনো ভূমিকা আছে?
- হ্যা স্যার, অবশ্যই আছে। আমরা শিক্ষক। আমরাও প্রতিটা ছেলেমেয়ের বাবা-মা। আমরা জাতির বিবেকও। আমরা যদি স্যার না জাগি- তাহলে সকাল তো কোনোদিন আসবে না।
- কিন্তু..................
- স্যার কোনো কিন্তু নেই। আপনি শুধু আমাকে সহায়তা করেন। আমার সাথে একটু চলেন।
হেড মাস্টার আর না করতে পারলেন না। তিনিও চললেন।

(পর্ব-৪)
▬▬▬
বরের নাম রুহিন। মোটামুটি মোটা বলে সবাই ওকে 'মোটকু রুহিন' বলে ডাকে। জিন্সের প্যান্টের ওপরে হাফ হাতা কালো-সাদা চেকের শার্ট পরে এসেছে বিয়ে করতে। তবে মাথায় মুকুট পরতে ভুল করেনি মোটকু রুহিন। বরের এই ড্রেস দেখে চোখ গোল হয়ে গেল রুমার চাচীর। জিজ্ঞেস না করে চাচী থাকতে পারলেন না, "বরের কি কান্ডজ্ঞান নাই? বিয়ার দিন পাঞ্জাবি পায়জামা পরা ছাড়া কোনো বর আসে নাকি?" উত্তরে রুহিন বলল, "আসলে হইছে কি চাচীম্মা, পরথম বিয়া তো! তাই একটু ভুল অইবার লাগছে। পরেরবারে ইংশাল্লা ভুল করব না নে।" অন্দর মহলে হাসির রোল বয়ে গেল।

দূর থেকে বিয়ে বাড়ির গান শোনা যাচ্ছে। বাঙালির রুচিবোধ কতটা বিকৃত হয়েছে তা ওই গান না শুনলে বুঝতে পারতেন না হাকিম মাস্টার। একটা নারী কণ্ঠের গান-
"তুমি দিয়ো না-কো বাসর ঘরের বাত্তি নিভাইয়া.........
আমি অন্ধকারে- বদ্ধঘরে যাবো মরিয়া..............."

হাকিম মাস্টার, স্কুলের হেড স্যার, হবি চেয়ারম্যান আর দুজন পুলিশের কনস্টেবল বিয়ে বাড়িতে ঢুকছে। দূর থেকে ওদের দেখেই পেট খারাপ হয়ে গেল বরের। রুবিকে দেখেই বলল, "ও খালাম্মা, আপনাগো হাগুখানা কোন দিকে?"

টয়লেটের দরজায় সিটকিনি লাগিয়ে লম্বা একটা শ্বাস নিল বর রুহিন। গু-এর গন্ধে ভুলে গেল বিয়ের সৌরভ। বরপক্ষের অন্যান্য আত্মীয়রা আশে পাশের পাটক্ষেতে আশ্রয় খুঁজল।
বাল্য-বিবাহের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে রুমার বাবা-মাকে বুঝানো হলো এভাবে:

অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিলে- মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অল্প বয়সে বাচ্চা হবার সম্ভাবনা তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। এমনকি মারা যেতে পারে নবজাতক শিশু ও তার মা। শারীরিকভাবে দুর্বল মা- জন্ম দিয়ে থাকে শারীরিকভাবে দুর্বল শিশু। সংসার জ্ঞান না থাকায়- অল্পবয়সী মেয়েরা শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে খাপ খেয়ে চলতে পারে না। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেও ভাঙনের সম্ভাবনা প্রবল হয়। কুড়িতে বুড়ি হয় এমন বাল্যবিবাহিত মেয়েরাই। আর, বর্তমানে একটি মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে বাবা-মায়ের তেমন টাকা-পয়সাও লাগে না। লাগে একটু সদিচ্ছা আর সচেতনতা। সরকার মেয়েদের শিক্ষাকে অবৈতনিক করেছে এবং মাসে মাসে উপবৃত্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। একটা ছেলে যেমন সংসারের বাতি, মেয়েও তাই। একটা মেয়েও ধরতে পারে সংসারের হাল। কন্যা সন্তান কোনো বোঝা নয়। বরং পরিবার ও দেশের সম্পদ।

রুমার বাবা-মা তাদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হলো।
'পাগলা স্যার' হিসেবে পরিচিত হাকিম স্যারের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে এলো তথাকথিত এলিট শ্রেণির মানুষের।
সমাজ হাকিম মাস্টারদের কিছু না দিলেও, হাকিম মাস্টাররা সমাজকে নিঃস্বার্থে সেবা দিয়ে যাচ্ছে অবিরাম।

"স্যালুট হাকিম স্যার! জাস্ট হ্যাটস অফ!!!" মনে মনে বলল রুমা।
কিছু ভালো মানুষের উপস্থিতিতে পৃথিবীটা কতো সুন্দর হতে পারে!
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

বছর দশেক পর। 
ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় একা একা হাঁটছিলেন হাকিম মাস্টার।
হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন এক চব্বিশ বছরের মেয়ে তার পা জড়িয়ে ধরেছে। মেয়েটির পরনে পুলিশের ড্রেস। ব্যাজ দেখে বোঝা যায়- মেয়েটি পুলিশের এসিপি (বিসিএস ক্যাডার)।

মেয়েটি আর কেউ নয়।
সেদিনের সেই পিচ্চি মেয়ে রুমা। এক অপার্থিব ভালোলাগায় জল চলে এলো হাকিম স্যারের চোখে। মেয়েটি তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক অপূর্ব যুবককে দেখিয়ে পরিচয় করিয়ে দিলো- "উনি মিস্টার সৌম্য। ডক্টর (বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার) সৌম্য চৌধুরী। আমার হাজব্যান্ড।"

পরিতৃপ্তিবোধে নির্বাক হয়ে যাওয়া হাকিম মাস্টার মনে মনে বললেন, "মেয়েরা, যদি তোমরা জিতো, তাহলে আমরাও জিতি। জাস্ট হ্যাটস অফ....................."
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

গল্পকার: ওয়াদুদ খান
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, সদরপুর সরকারি কলেজ
লেখকের প্রকাশিত সকল উপন্যাস পেতে:
📞📞 ☎☎ ০১৬৭৩-৫৯৪৫৭৯ ☎☎📞📞
ফ্রি পড়তে ভিজিট করুন : wadudkhan.blogspot.com

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

আর নয় ডায়াবেটিসকে ভয় | Know, learn & beat Diabetes


হয়তো লেখাটি আপনার জন্যই
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
আপনি কি আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন?

তাহলে শুরুতেই জেনে নিন-
ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ:
✔ হঠাৎ করে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া কিংবা হ্রাস পাওয়া।
✔ বারবার খেলেও পেটে ক্ষুধা অনুভব করা।
✔ অতিরিক্ত পানি পিপাসা বোধ করা।
✔ শরীরের কোথাও কেটে গেলে, ঘা শুকাতে দেরি হওয়া।
অথবা,
✔ আপনার বংশে যদি ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে- যেমন: মা-বাবা, ভাই-বোনের, তবে আপনার এ রোগ হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

ডায়াবেটিস হয়েছে বলে তীব্র সন্দেহ থাকলেও, আমি দেখেছি- মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে এই ভয়ে অনেকে ডায়াবেটিস মাপার সাহস পান না। আপনার অবস্থাও যদি এরকম হয়ে থাকে, তাহলে আপনি মারাত্মক ভুল করছেন।

ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে আপনার জন্য রয়েছে নিম্নোক্ত হুমকি:
🔴 ব্রেইন স্ট্রোক
🔴 হার্ট এটাক
🔴 প্যারালাইসিস
🔴 চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ
🔴 কিডনি ডায়ালাইসিস
কি, ভয় পেয়ে গেলেন?

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
                      ডায়াবেটিস নিয়ে ভয়
                        আর নয়, আর নয় 
        Let's learn how to beat Diabetes...
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

মনে রাখবেন-
ডায়াবেটিস অনিরাময়যোগ্য হলেও, সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এজন্য যা করতে হবে: 
🔵 পরিমিত খাদ্যগ্রহণ করতে হবে।
🔵 মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য যদি খেতে খুব ইচ্ছে হয়, তবে একেবারেই অল্প করে খাবেন। তবে অবশ্যই প্রতিদিন নয়।
🔵 উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
🔵 প্রতদিন নিয়ম করে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট হাঁটতে হবে।
🔵 ডাক্তারেরে নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে কিংবা ইনসুলিন নিতে হবে।
🔵 মাসে কমপক্ষে একবার রক্তের গ্লুকোজ মাপতে হবে।

যে মারাত্মক ভুল কখনোই করবেন না:
🔴 ডায়াবেটিস একেবারে সেরে গিয়েছে মনে করে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দিবেন না।
🔴 বছরের পর বছর ডায়াবেটিস না মেপে একই ঔষধ সেবন করে যাবেন না৷
🔴 শুধু গাছগাছালির পাতা কিংবা রস খেয়ে, অথবা শুধু হাঁটাহাটির মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না।
🔴 দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকবেন না।
🔴 কবিরাজ, হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার কিংবা গ্রাম্য ওষুধের দোকানদার কিংবা কম্পাউন্ডারের পরামর্শে চলবেন না।

➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মানে দীর্ঘজীবন
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আপনি:
✔ অন্য দশজন মানুষের মতোই স্বাভাবিক জীবন যাপন করবেন।
✔ আপনার স্ত্রীকে পূর্বের মতোই সঙ্গ দিতে পারবেন। (ডায়াবেটিস রোগীরা যৌন দুর্বলতায় ভুগে বলে বহুল প্রচলিত)
✔ আগের মতোই প্রাণশক্তিতে ভরপুর থাকবেন।
✔ অন্য দশজন মানুষের মতোই ৭০ থেকে ৯০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘজীবন পেতে পারেন।

মনে রাখবেন, মৃত্যু মানুষের হবেই। ডায়াবেটিস হলেও, না হলেও। অতএব, "ডায়াবেটিসের কারণে আমি আর বেশিদিন বাঁচবো না" মনে করা বোকামি।

⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫
              ডায়াবেটিস নিয়ে ভয় কিসের? 
                    কিসের এত দুশ্চিন্তা?
              মিষ্টি নাহয় ছেড়েই দিলাম- 
                   খেলাম নাহয় টক, তিতা...
⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫⚫

ধর্মীয় দৃষ্টিতে ডায়াবেটিসের লাভ: 
🔵 অসুস্থতাও আল্লাহর নিয়ামত। আবার পরীক্ষাও। এ পরীক্ষায় ধৈর্যধারণ করলে, অবশ্যই পরকালে বিশেষ পুরস্কার পাওয়ার আশা করা যায়।
🔵 অল্প ভক্ষণ করলে আয়ু বাড়ে। মানুষ তাঁর জন্য প্রদত্ত রিযিক না খেয়ে মারা যাবে না। ডায়াবেটিস রোগী কম খায় বলে, তাঁর রিযিক আরও বেশি সময়ের জন্য বরাদ্ধ থাকবে।
🔵 অসুস্থ ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়। অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির চেয়ে মৃত্যুর কথা বেশি স্মরণ করে থাকেন। হঠাৎ করে মৃত্যু বরণ করলে, অনেকক্ষেত্রে তওবা করার সুযোগ হয় না৷

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
          ডায়াবেটিস যে কারও হতে পারে।
        এ রোগ কোনও পাপের ফল নয়। 
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

ডায়াবেটিস নিয়ে যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে ফোনে 📞📞📞☎☎☎ কিংবা সরাসরি যোগাযোগ করবেন। অবশ্যই, অনলাইন, ফেসবুক, ইউটিউব, বইপত্র  📚 📙📘 অথবা পত্রিকার কলাম পড়ে নিজেই কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।

(লেখাটি প্রয়োজনীয় মনে হলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করুন। লেখকের নাম অক্ষুন্ন রেখে কপি, পেস্ট করেও সেইভ কিংবা আপনার টাইমলাইনে স্ট্যাটাস দিতে পারেন।)

▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
লেখা: ওয়াদুদ খান
কবি ও কথাসাহিত্যিক
সদরপুর, ফরিদপুর
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

সময় থাকলে ভিজিট করুন:
http://learning-bangla.blogspot.com
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
⏺⏺⏺🎤🎤🎤 একদম ফ্রি 🎤🎤🎤 ⏺⏺⏺
ইংরেজি স্যারের বাংলা ক্লাস  করতে চাইলে পেইজটিতে 🏴🏴🏴
লাইক 👍👍👍 দিয়ে কানেক্টডে থাকুন।
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖

Saturday, 18 August 2018

কুরবানিও ফ্যাশন এখন | রম্য কবিতা

কু র বা নি

ও য়া দু দ   খা ন

কুরবানি আজ ত্যাগ বোঝায় না
বোঝায় তোলা সেলফি
ট্যাগ করা হয় বন্ধু-স্বজন
দেখ রে গরু কিনছি।

কুরবানি আজ হইছে ফ্যাশন
ফেবুর লাগি স্ট্যাটাস
আমার গরু এত্ত বড়ো
খাচ্ছে ভুষি, খাচ্ছে ঘাস।

কুরবানি আজ লোক দেখানো
সমাজ জুড়ে কম্পিটিশন
তোমার গরু পিচ্চি এত-
আমার গরু মোটকু ভীষণ।

কুরবানিআজ ফ্রিজমুখী
গরিব-দুখির অংশ নাই
বছর জুড়ে মাংস খাওয়া
নিয়ত ছহির বংশ নাই।

কুরবানি আর কুরবানি নাই
হয়ে গেছে ট্র‍্যাডিশান
ঋণ করে তাই- কুরবানি চাই
রাখতে বংশের সম্মান।

আজকে যারা কুরবানিতে
খাচ্ছে গরুর মাংস,
ভুলে গেছে তাদের কাছে
আছে গরিবের অংশ।

কবিতা লেখার তারিখ ও সময় 
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
সকাল: ৮:৫৪

কু র বা নি | ত্যা গ | S A C R I F I C E... (অসামান্য আলোচনা)

কুরবানির গরু (প্রতীকী)

ধনাঢ্য মুসলিমদের উপর আল্লাহ তা'আলা কুরবানিকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন (ওলামায়ে কেরামের এমনটাই অভিমত)। কুরবানি মানেই হচ্ছে ত্যাগ। বাংলায় প্রচলিত, "ভোগে সুখ নাই, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।" এখন, প্রশ্ন জাগতে পারে, "কুবানিতে কী ত্যাগ করছেন ধনাঢ্য মুসলিম? কুরবানি তো ভোগেরই আরেক নাম!"
সত্যি বলতে কি, বর্তমানে ইসলামের প্রকৃত চর্চা নেই বলে, কুরবানিকে আর ত্যাগ বলে মনে হয় না কারও। বরং লোক দেখানো এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা বলে দৃশ্যমান হয়।

সেলফিস্টিক হাতে নিয়ে গরুর গলা ধরে যখন কোনো মুসলিম তরুণ কিংবা তরুণী ফেসবুকে পিকচার আপলোড দেয়, তখন কুরবানির মর্মবাণীকে যেন উপহাসই করা হয়।
সেলফি তোলার প্রতিযোগিতা চলছে  

কিছু লোক নিজেদেরকে আরও ধনবান প্রমাণের আশায় উচ্চমূল্যে গরু কিনে কৌশলে জাহির করার ধান্দায় থাকে। কুরবানির হাটে কিংবা ঈদের মাঠে এঁদের সরব উপস্থিতি থাকলেও, দিনান্তে মসজিদে একবারও দেখা যায় না। নামাযের কথা বললে, এঁদের 'গ্যাস্ট্রিক, পেট ব্যথা' বেড়ে যায়। কুরবানির গরুর গলায় লাল মালা পরিয়ে মহল্লাতে চক্কর দেয়। কেউ জিজ্ঞেস না করলেও কৌশলে বলে, "দাদা, এক লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম। কেমন হলো?"

মনে রাখতে হবে, কুরবানির কবুলিয়াতের শর্ত হচ্ছে সহীহ নিয়্যত। অন্তরের খবর অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা জানেন। এ বিষয়ে সন্দেহ থাকলে কুরবানি করার দরকার কী?    আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন:-
﴿ لَن يَنَالَ ٱللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَآؤُهَا وَلَٰكِن يَنَالُهُ ٱلتَّقۡوَىٰ مِنكُمۡۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمۡ لِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٣٧ ﴾ [الحج: ٣٧]
অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে ওগুলোর (কুরবানির পশুর) না গোশত পৌঁছে, আর না রক্ত পৌঁছে বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিঁনি ওগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারো, এজন্য যে, তিঁনি তোমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, কাজেই সৎকর্মশীলদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও। [সূরা হাজ্জ:৩৭]।
কুরবানির গোশত আল্লাহ তা'আলার কাছে পৌঁছে না। মানুষের কাছেই পৌঁছাবে। মানুষই খাবে। তাই বলে, যিনি কুরবানি দিচ্ছেন, তিনি একাই সারাবছর খাবেন, আর পাশের গরিব প্রতিবেশী ঈদের দিন গোশতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরবেন, তা তো নয়। আমার প্রতিবেশীর খোঁজ রাখার নৈতিক দায়িত্ব আমারই। তাকে কেন আমার দ্বারে আসতে হবে? আমি তার দ্বারে গিয়ে দিয়ে আসলে সমস্যা কোথায়? 
আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন বলেন-
﴿ فَكُلُواْ مِنۡهَا وَأَطۡعِمُواْ ٱلۡبَآئِسَ ٱلۡفَقِيرَ ٢٨ ﴾ [الحج: ٢٨]
‘অতঃপর তোমরা তা হতে আহার কর এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার করাও।’ [সূরা হাজ্জ:২৮]।
একদম সাদামাটাভাবে বুঝা যাচ্ছে, যিনি কুরবানি দিবেন, তাঁর জন্য গোশত খেতে মোটেই আপত্তি নেই। খেতে যখন মহান আল্লাহ তা'আলা নিষেধ করছেন না, তখন সেটা মেনে নিতে সবাই বাধ্য। কিন্তু, 'দুঃস্থ ও অভাবগ্রস্তকে আহার করাও'- এই অংশের দিকে অনেকেরই দৃষ্টি থাকে না।
ঈদুল আযহার আগে ফ্রিজের বিক্রি বেড়ে যায়। এর কারণ, ধনাঢ্যরা কুরবানির গোশত সংরক্ষণ করতে চায়। অনেকে গর্ব করে বলেও থাকেন, "আরে, গত কুরবানির গোশত তো এই কুরবানিতেও শেষ হয়নি।" গোশত খাওয়াই যদি উদ্দেশ্য হবে, তবে কুরবানির দিন গরু যবেহ না করে, বছরের যেকোনো দিন করলেই হয়।
যারা বছরজুড়ে কুরবানির গোশত ফ্রিজিং করে খান, তাঁরা নিচের হাদিসটি দলীল হিসেবে পেশ করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) কুরবানীর গোশত সম্পর্কে বলেছেন-
«كلوا وأطعموا وادخروا»
‘তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর।’ [বুখারী, হাদীস নং ৫৫৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৭১]
হাদিসে তো সংরক্ষণের কথা বলা আছে। তাহলে, সংরক্ষণ করলে দোষ কোথায়? দোষ নেই। হাদিসে এটাও আছে,'অন্যকে আহার করাও'- সেদিকে দৃষ্টিপাত করেছেন কি? অন্যকে আহার করানোর পরে যদি সংরক্ষণ করতে চান, তবে না বলার সুযোগ নেই।
কেউ যদি, কুরবানির সবটুকু গোশত গরিব দুঃখীর মাঝে বণ্টন করে দেন, তাতেও কিন্তু ওলামায়ে কেরামের আপত্তি নেই (অবশ্যই ইসলামের দৃষ্টিতে)। এমনকি, ওলামায়ে কেরাম এটাও বলে থাকেন, আপনার প্রতিবেশী যদি বিধর্মী হয়, তাকেও কুরবানির গোশত দিতে পারবেন।
তবে বেশিরভাগ ওলামায়ে কেরাম কুরবানির গোশতকে তিনভাগে বণ্টন করতে পরামর্শ দেন-
১। গরিব-দুঃখীদের জন্য২। নিজের আত্মীয় স্বজনের জন্য৩। নিজের জন্য
আমরা প্রথম দুটি ভুলে গিয়ে, তিন নম্বরটি নিয়েই বেশি মগ্ন থাকি।
হে আল্লাহ, আপনি আমাদেরকে এমন নিয়্যতে কুরবানি করার তৌফিক দান করুন, যেটা আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য। লোক দেখানো ইবাদত থেকে হিফাজত করুন।
আমীন!

লেখা ও গবেষণা
ওয়াদুদ খান 
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
সদরপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর

তথ্যসূত্র
কুরআন ও হাদিসের দলীলসমুহ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

Thursday, 16 August 2018

বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি | ওয়াদুদ খান

বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি


বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি

ইদানীং প্রকাশ্যে কাশতে ভয় পাই 
ভয় পাই হাসতেও 
কি হাসিতে, কি কাশিতে 
বিপদের আনাগোনা দেখি
বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি। 

জনাকীর্ণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে 
জোরে কথা বলতে পারি না 
পারি না সবেগে মুতে দিতেও 
কি কথায়, কি মোতায় 
বিপদের আনাগোনা দেখি
বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি। 

তোমাদের নষ্ট নগরে প্রকাশ্যে 
গলা ছেড়ে গান গাইতে পারি না 
পারি না বিড়িতে সুখটান দিতেও 
কি গানে, কি টানে 
বিপদের আনাগোনা দেখি
বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি। 

দুঃসময়ের কবলে পড়া এই আমি- 
স্বাধীনচেতা কবি হতে পারি না
পারি না ফেসবুকে 
খিলখিল করে হাসা ছবি দিতেও 
কি কবিতে, কি ছবিতে 
বিপদের আনাগোনা দেখি
বড়ো ভয়ে বেঁচে আছি। 

১৬ আগস্ট, ২০১৮
সদরপুর, ফরিদপুর

Sunday, 29 July 2018

মোবাইলে প্রতারণা থামছেই না | পড়ুন, জানুন ও শেয়ার করুন


ঘটনা-১
তার নাম রশিদ। 'ভ্যান রশিদ' নামেই সে বেশি পরিচিত। দিন এনে দিন খান। হঠাৎ একদিন ফোন পেলেন। ওপাশ থেকে বলা হলো, "আপনি ১ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কার জিতেছেন। কিন্তু এই টাকা উত্তোলনের জন্য কুড়ি হাজার টাকা বিকাশ করতে হবে।" কারও সাথে পরামর্শ না করেই ঋণ করে পরিশোধ করলেন কুড়ি হাজার টাকা। এরপর থেকে সেই ফোন নাম্বারটি সুইচ অফ। বেচারা রশিদ অজ্ঞতা ও লোভের মাশুল এখনো দিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনা-২   
তিনি মসজিদের ইমাম। পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করেন। হঠাৎ ফোন আসে, "আপনি কি ফ্রি রকেট একাউন্ট খুলতে চান? তাহলে ডায়াল করুন স্টার ওয়ান টু ওয়ান স্টার জিরো ফোর...... ইত্যাদি ইত্যাদি তারপর হ্যাশ বাটনে চাপুন।" হ্যাশ বাটনে চাপ দেওয়ার পর সেই ইমাম সাহেব খেয়াল করলেন তার মোবাইল থেকে ফ্লেক্সিলোডের চার নয়শত ছেচল্লিশ টাকা নেই। বলা বাহুল্য চার ডিজিটের পিন কোড দেওয়ার কথা বলে মূলত ওই টাকা হাতিয়ে নেয়। অর্থাৎ, "ফোর নাই ফোর সিক্স" আপনার নতুন কোড যা মূলত ওই টাকার এমাউন্ট।


ঘটনা-৩ 
"হ্যালো, আপনার সিমে নতুন একটা অফার এসেছে। ৫০০০/- টাকার টক টাইম ও কুড়ি জিবি ফোর জি ইন্টারনেট প্যাকেজ পাবেন দুই মাসের জন্য। এজন্য আপনার মোবাইলে ১০০০/- টাকা রিচার্জ করতে হবে আমাদের নির্দেশনা অনুসারে।" স্মার্ট ছেলে ইমরান ভাবলো, "টাকাটা যেহেতু আমার মোবাইলেই রিচার্জ করতে হবে, তবে রিস্ক নিতে আর সমস্যা কোথায়? তবুও পরীক্ষামূলকভাবে ও ১০০/- টাকার একটি কার্ড ওদের নির্দেশনা অনুসারে নিজের মোবাইলে রিচার্জ করতে গিয়ে, টাকা ওর নাম্বারে ঢুকেনি। ঢুকেছে ওদের নাম্বারে। ১০০/- টাকা লস দিয়ে সেই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল ইমরান।

এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটছে। আমরা নিজেরা সতর্ক থাকি। অন্যদের সতর্ক করে দিই। অফার সংক্রান্ত কোনো ফোনকলে বিভ্রান্ত না হই। ঝোঁকের বশে রিকোয়েস্টিং বাটনে প্রেস না করি।

একান্ত প্রয়োজন হলে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে কথা বলতে পারি। মনে রাখবেন, ওরা কিন্তু সংঘবদ্ধ চক্র।

(বাকিটুকু শুনুন অডিওতে। ক্লিক করুন নিচের ইমেজে।)


দেখা থেকে লেখা 
ওয়াদুদ খান 
২৮ জুলাই, ২০১৮   

Wednesday, 25 July 2018

দুটি রম্য কবিতা /// ওয়াদুদ খান



(হাজারো বালক/ বালিকার মনের কথা ছন্দে ছন্দে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম)
১. হে বালক

হয়ে অলি          কেন এলি
আমার ছোট্ট জীবনে?
সব লুটে          এখন ছুটে
পালালি কার কাননে?

মিথ্যে বলে          হৃদয় নিলে
ছলে বলে তুমি।
ভালোবেসে          গেলাম ভেসে
চোখের জলে আমি।

রাত্রি জেগে          প্রেমাবেগে
লিখতে চিঠি কত
এখন দেখি          সবই ফাঁকি
তোমার কথা যত।

কিসের তরে          গেলে ওড়ে
আমার আকাশ ছেড়ে?
কোথায় গেলে          আমায় ফেলে
একলা রেখে ওরে?

আমি এখন          আছি কেমন
সেটা কি আর বুঝবে?
হারিয়ে গেলে          আঁধার কোলে
তখন আমায় খুঁজবে।

ওহে বালক          মনের চালক
তুমি আমার হলে না।
জনম ভরে          খুঁজে ফিরে
আমাকে আর পাবে না।

কবিতা লেখার তারিখ: ২০ আগস্ট, ২০১৬ (সন্ধ্যা)
বি.দ্র. যারা ছন্দোবদ্ধ কবিতা লেখার চর্চা করছো তাদের জন্য এই কবিতায় ভাবনার খোরাক আছে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


২. প্রিয়তমা, করো ক্ষমা
করো ক্ষমা,          প্রিয়তমা
বাসবো না ভালো আর
ভালোবেসে          গেছি ফেঁসে
লাইফটা ছারখার।

কত বাঁশ,          কত ক্রাশ
খেয়ে যাব বলো না? 
মোর কথা,           শত ব্যথা
তোমরা তো বুঝলে না।

প্রিয়তমা,          করো ক্ষমা
'ভালোবাসি' বলবো না
ভুল মতে          প্রেম-পথে
আমি আর হাঁটবো না।

আমি একা          কত ছ্যাঁকা
খেতে পারি বলো আর? 
প্রেম ফেলে          যাব চলে
ফিরবো না কভু আর।

করো ক্ষমা,          প্রিয়তমা
প্রেম-ট্রেম আর না
খাব গাঁজা,          হব রাজা
প্রেম-ট্রেম তবু না।

২২ জুলাই, ২০১৮